Saturday, 11 November 2017

আইনজীবী হিসাবে তালিকা ভূক্তির নিয়ম

★তালিকাভূক্ত হওয়ার যোগ্যতাঃ
১) একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকাভুক্ত হতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ২) বাংলাদেশের কোন অনুমদিত বিশ্ববিদ্যালয় হতে অথবা বিদেশী কোন বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন বিষয়ে ডিগ্রীধারী হতে হবে। ৩) আইন বিষয়ে ডিগ্রি সম্পন্নকারী কোন বাংলাদেশী নাগরিক বার কাউন্সিলে এ্যাডভোকেট তালিকাভূক্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশের নিয়ম অনুযায়ী কোন সিনিয়রের সাথে শিক্ষানবীশ হিসাবে কাজ করার যোগ্য হবেন। শিক্ষানবীশের সিনিয়র হবেন এমন একজন আইনজীবী যিনি কমপক্ষে ১০ (দশ) বছর আইনজীবী হিসাবে পেশাগত কার্য করছেন। তবে একজন সিনিয়র প্রতি বছর ৪ জন বেশি শিক্ষানবীশ গ্রহন করতে পারেন না। ৪) এল.এল.বি ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার পরই শিক্ষানবীশকাল শুরু করা যায়। শিক্ষানবীশকাল শুরুর পর একজন শিক্ষানবীশকে তাহার সিনিয়রের সাথে শিক্ষানবীশ চুক্তি (Contract of Pupillage) সম্পাদন করতে হয় এবং উক্ত চুক্তিপত্রটি বার কাউন্সিল নির্ধারিত একটি রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরন করে সংযুক্তি হিসাবে চুক্তি করার ৩০ দিনের মধ্যে বার কাউন্সিল সচিব বরাবর দাখিল করতে হয়।
★রেজিষ্ট্রেশন এর জন্য আবেদনঃ
রেজিষ্ট্রেশন ফরমের সাথে যা যা প্রদান করতে হয়ঃ একজন শিক্ষানবীশকে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য বার কাউন্সিল নির্ধারিত রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরন করে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর দাখিল করতে হয়। বর্তমানে পে-অডার, ডি.ডি আথবা বার কাউন্সিল প্রদত্ত পে-স্লিপের মাধ্যমে ৪০০/- সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট শাখায় জমা দিয়ে উক্ত স্লিপের একটি অংশ বার কাউন্সিলে জমা দিয়ে বার কাউন্সিল থেকে সংগ্রহ করা যায়।
★রেজিষ্ট্রেশন ফরমের সাথে নিন্মোক্ত কাগজাদি সংযুক্ত করতে হয়-
ক) সিনিয়রের সাথে সম্পাদিত শিক্ষানবীশ চুক্তি পত্রটির (Contract of Pupillage) সমর্থনে ১ম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট অথবা নোটারি পাবলিকের সামনে একটি হলফনামা (২০০/- টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে) সম্পাদন করতে হয়। [Rule-60,Sub-Rule-3(ii)]
খ) সিনিয়র কর্তৃক সত্যায়িত ৩ (তিন) কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
গ) রেজিস্ট্রেশন ফরম উত্তোলনের জন্য প্রদত্ত ৪০০/- টাকা ফি এর বার কাউনিাসল কপি বা পে-অর্ডার বা ডি.ডি।
ঘ) রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ প্রদত্ত ৮০০/- টাকার পে-অর্ডার, ডি.ডি অথবা বার কাউন্সিলের পে-স্লিপের অংশ।
ঙ) সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও মার্কশীটের ফটোকপি (সিনিয়র কর্তৃক সত্যায়িত)।
★নোট:
রেজিস্ট্রেশন ফরম বার কাউন্সিলে জমা দেয়ার পূর্বে সংযুক্ত কাগজাদি সহ ১টি ফটোকপি করে জমা গ্রহনকারি অফিসার থেকে “রিসিভ করা হয়েছে” মর্মে সাক্ষর করিয়া নিজের সংগ্রহে রাখতে হবে।
বার কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য আবেদনপত্র: শিক্ষানবীশ চুক্তির (Contract of Pupillage) মেয়াদ ৬ মাস পূর্ণ হলে একজন শিক্ষানবীশ আইনজীবী তালিকা ভুক্তির পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য আবেদন করতে পারে। উক্ত ফরমটির নাম “Application for Enrolment as Advocate” [Form-A] যা বার কাউন্সিলের আদেশরুল–৫৮ অনুযায়ী সম্পাদন করতে হয়। ফরমটি বর্তমানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে বার কাউন্সিলের অনুকূলে পে-অর্ডার, ডি.ডি অথবা পে-স্লিপের মাধ্যমে ৩৫০/-টাকা জমা করে সংগ্রহ করা যায়।
★উক্ত ফরমটি পূরন করে নিম্ন বর্নিত কাগজাদি সহ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর জমা দিতে হয়-
ক) রুল-৬০ অনুযায়ি ফরম-তে ৬ মাস শিক্সানবীশকাল সমাপ্ত হইয়াছে এই মর্মে সিনিয়র (Pupil Master) প্রদত্ত সার্টিফিকেট। সার্টিফিকেটটি কার্টিজ পেপারে প্রদত্ত হয়।
খ) কার্টিজ পেপারে ৫টি দেওয়ানী ও ৫টি ফৌজদারী মামলার তালিকা যে মামলাগুলো পরিচালনার সময় সিনিয়রের সাথে শিক্ষানবীশ আইনজীবী উপস্হিত ছিলেন।
গ) ২ জন বিশিষ্ট ব্যাক্তি কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক প্রশংসাপত্র।
ঘ) শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও মার্কশীটের সিনিয়র কর্তৃক সত্যায়িত ফটোকপি (S.S.C, Degree এবং L.L.B)।
ঙ) সদ্য তোলা ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি যা বারের সেক্রেটারি অথবা সিনিয়র দারা সত্যায়িত হতে হবে।
চ) উপরোক্ত কাগজাদি ও তাহাতে বর্নিত তথ্যাদির সত্যতা সম্পর্কে নোটারী পাবলিক অথবা ১ম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে সম্পাদিত হলফনামা (২০০/-টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে)।
ছ) এনরোলমেন্ট ফি বাবদ ১৫০০/-, পরীক্ষা ফি বাবদ ৭০০/- এবং বাতসরিক ফি বাবদ ২০০/- একুনে সর্বমোট ২৪০০/-টাকার ডি.ডি, পে-অডার বা পে-স্লিপের কপি।
জ) রেজিস্ট্রেশন ফরম বাবদ প্রদত্ত ৩৫০/-টাকার ডি.ডি, পে-অর্ডার বা পে-স্লিপের কপি।
★নোট:
একবার রেজিস্ট্রেশন করলে তার মেয়াদ থাকবে ৫ বছর।
★পরীক্ষাসমূহঃ
বার কাউন্সিলে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের পর একজন প্রতিদ্বন্ধিকে ৩ টি পরীক্ষায় উর্ত্তিণ হতে হয়। যথা :
১) MCQ পরীক্ষা: MCQ পরীক্ষায় ১০০ টি প্রশ্ন দেয়া হয় যার মধ্যে কমপক্ষে ৫০ পেলে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর যোগ হয় এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য .২৫ বিয়োগ হয়। পরীক্ষার সময় ১ ঘন্টা।
২) লিখিত পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরে যার মধ্যে উত্তীর্ণ হওয়া যায় ৫০ নম্বরে। সময় ৪ ঘন্টা,
৩) মৌখিক পরীক্ষা: মৌখিক পরীক্ষা ৫০ নম্বরে যার মধ্যে পাশ নম্বর ২৫।
★নোট: কোন প্রতিদ্বন্ধী MCQ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারে ১ বার। এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পরপর তিনবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার সুযোগ আছে।

No comments:

Post a Comment

বিদেশ থেকে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া

এই জন্য অন্তত ১ দিনের জন্য হলেও  husband k বাংলাদেশে আসতে হবে বাংলাদেশে এসে  কাজী অথবা একজন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে, সেখানে গিয়ে  তার স্ত্...