ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত : সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ’ করে সাক্ষীদের
অনুপস্থিতি নিশ্চিত করার অভিযোগ * জামিন পাচ্ছেন গুরুতর অপরাধের আসামিরা *
একেকটি মামলায় শতাধিক দফা সময় চেয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ শরীয়তপুর জেলার
ভেদরগঞ্জ থানার পুটিয়া তালুবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম ওরফে
সায়েদুল. ২০০১ সালের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকায় অস্ত্রসহ
গ্রেফতার হন তিনি।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে সায়েদুলের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে তেজগাঁও
থানায় ৯২(৯)০১ নম্বর মামলাটি দায়ের করে। তদন্ত শেষে ২০০২ সালের
জানুয়ারিতে আদালতে এ মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়। ২০০২
সালের ২৮ এপ্রিল মামলাটির একমাত্র আসামি সায়েদুলের বিরুদ্ধে চার্জ
(অভিযোগ) গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরু করেন আদালত। চার্জ গঠনের ১৫ বছর পরও
অদ্যাবধি কোনো সাক্ষীই আদালতে সাক্ষ্য দেননি। চার্জশিটে মামলার বাদী
তেজগাঁও থানার তৎকালীন এসআই তরিকুল ইসলাম ও তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) এসআই
মোমিনুল ইসলামসহ পুলিশের ছয় সদস্য ও তিন পথচারীকে মামলার সাক্ষী করা হয়।
আদালতে সাক্ষ্য না দেয়ায় ইতিমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে ‘অজামিনযোগ্য
গ্রেফতারি পরোয়ানা’ জারি করেছেন আদালত। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পরও কোনো
সাক্ষীকে আদালতে হাজির করতে পারছেন না দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তারা।
এ মুহূর্তে ঢাকার চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ওই
মামলায় কয়েক বছর ধরে সময় আবেদন করে চলেছে রাষ্ট্রপক্ষ। আর আদালতও তা
মঞ্জুর করে সাক্ষী হাজিরের জন্য পরবর্তী দিন ধার্য করছেন। ইতিমধ্যেই সাক্ষী
হাজিরের জন্যই এই আদালতে শতাধিক দফা তারিখ পড়েছে। এর আগে মামলাটি অন্য
আদালতে থাকা অবস্থায়ও একইভাবে অসংখ্য দফায় সাক্ষী হাজিরার তারিখ পড়েছে।
এভাবেই প্রায় ১৬ বছর ধরে ঝুলে আছে মামলাটির বিচার কাজ। দীর্ঘদিন
কারাভোগের পর আসামি সায়েদুল বর্তমানে জামিনে আছেন। মামলাটির নথি ঘেঁটে
পাওয়া গেছে উল্লিখিত সব তথ্য। শুধু এই মামলায়ই নয়, ঢাকা মহানগর দায়রা
জজশিপের ১৬টি আদালতে সাক্ষীর অভাবে প্রায় তিন হাজার মামলার বিচার কাজ এক
যুগের বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে। এর মধ্যে ২৩ বছরের পুরনো মামলাও রয়েছে। এসব
মামলায় বারবার নির্ধারিত তারিখে সাক্ষীদের হাজির করতে ব্যর্থ হচ্ছে
পুলিশ।
অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাক্ষী খুুঁজে পাওয়া যাচ্ছে কিনা- তা প্রতিবেদন দিয়ে
আদালতকে জানানো হয় না। কখনও কখনও ‘ঠিকানা অনুসারে সাক্ষীদের খুঁজে পাওয়া
যাচ্ছে না’- এ মর্মে আদালতে দায়সারা প্রতিবেদন দাখিল করা হচ্ছে। ফৌজদারি
আইনের ১৭১(২) উপধারায় বলা আছে, সাক্ষী হাজির করা পুলিশের কাজ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, অনেক ক্ষেত্রেই আসামি পক্ষ সংশ্লিষ্টদের ‘ম্যানেজ’
করেই সাক্ষীদের আদালতে হাজির না করার ব্যবস্থা করেন। আর সাক্ষী হাজির না
হওয়ায় যাবতীয় সুবিধা পাচ্ছে আসামি পক্ষ। কারণ বছরের পর বছর বিচারাধীন
থাকায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করা দুরূহ হয়ে পড়ে রাষ্ট্রপক্ষের।
জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার
যুগান্তরকে বলেন, যেসব পুলিশ কর্মকর্তা আদালতে সাক্ষী হাজিরের ক্ষেত্রে
গাফিলতি করছেন- সুনির্দিষ্ট প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা
নেয়া হবে। বিশেষ করে মামলা করে যেসব পুলিশ সদস্য আদালতে সাক্ষী দিতে
উপস্থিত হচ্ছে না- তাদের কোনো প্রকার ছাড় দেয়া হবে না।
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
বিদেশ থেকে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া
এই জন্য অন্তত ১ দিনের জন্য হলেও husband k বাংলাদেশে আসতে হবে বাংলাদেশে এসে কাজী অথবা একজন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে, সেখানে গিয়ে তার স্ত্...
-
মুচলেকা কি (what is bond) ? কেউ অপরাধ করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে, এটা আইনের বিধান। তবে কোন অপরাধ সংঘটনের পুর্বেই যদি কোন ব্যক্তিকে তা থেক...
-
দোকান ভাড়া দেয়া এবং নেয়ার ক্ষেত্রে চুক্তিপত্র থাকা আবশ্যক দোকান ভাড়া দেয়া এবং নেয়ার ক্ষেত্রে চুক্তিপত্র থাকা আবশ্যক। এক্ষেত্রে দোকানের মা...
-
★তালিকাভূক্ত হওয়ার যোগ্যতাঃ ১) একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকাভুক্ত হতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হ...
No comments:
Post a Comment