Saturday, 11 November 2017

পালিয়ে বিয়ে করার পূর্বে যা জানা গুরুত্বপূর্ণ

আমার এই লেখার উদ্দেশ্য পালিয়ে বিয়ে করতে উৎসাহিত করা নয়, বরং পালিয়ে বিয়ে করার পর আইনি জামেলা সম্বন্ধে সাবধান করা।পালিয়ে বিয়ে করতে যেয়ে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যেমন, মেয়ের পরিবার কর্তিক অপহরণ মামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নারী নির্যাতনের মামলা, মেয়ের বয়স যদি ১৬ বৎসরের কম হয় তাহলে অপহরণ করে ধর্ষন সহ আর ও অসংখ্য মামলা, যার পরিণতি হতে পারে জীবনের সকল আশা আখাংকার সমাধি।
যারা ভালবাসার মানুষটিকে কোনভাবেই হাতছাড়া (অবশ্যই প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের স্বাধীন সম্মতি ক্রমে) করতে চান না তারা নতুন জীবন শুরু করার আগে আইনি বিষয় জেনে অগ্রসর হওয়া উচিৎ। নতুবা নতুন সংসার শুরু করার আগে ভাগ্যে জুটবে জেল ও জরিমানার গ্লানি। পালিয়ে বিয়ে করতে গেলে মুসলিম ছেলে মেয়েদের মনে প্রথম প্রশ্ন জাগে বিয়েটার বৈধতা কেমন হবে ? বিয়েটাই বা কোথায় করতে হবে ? কোর্টে নাকি কাজী অফিসে ? ছেলেরা ভাবে, মেয়ের বাবা যদি মামলা করে দেয় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে তাহলে কি জেল টেল খাটতে হবে ? ইত্যাদি।

অনেকে ভাবেন এসব ক্ষেত্রে হয়ত কোর্ট ম্যারেজ করতে হবে। কোর্ট ম্যারেজ টার্মটা আমরা প্রায়ই শুনে থাকি। কিন্তু এটা নিয়ে অনেকের ভুল ধারনা আছে। অনেকে যারা অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া বা পালিয়ে বিয়ে করতে চায় তারা কোর্ট মারেজ করতে যায় বা করতে চায়।
অনেকে মনে করেন কোর্ট ম্যারেজ হয়তো কোর্টে গিয়ে বিয়ে করা। অথবা মাজিস্ট্রেট-এর সামনে বিয়ে করা। আসলে তা নয়। কোর্ট ম্যারেজ করতে হলে আপনাকে যেতে হবে কোন নোটারী পাবলিকের (সরকারী রেজিস্টার্ড উকিল) কাছে। তিনি আপনাদেরকে (বর কনে) ১০০ বা ২০০ টাকার স্ট্যাম্পে একটি হলফনামায় সই করাবেন যাতে লিখা থাকবে আপনারা প্রাপ্তবয়স্ক এবং স্বজ্ঞানে, স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছেন।
তার মানে কি দাড়ালো? বিয়ে আপনাদেরকে আগেই করতে হবে। কোথায়? যথারিতি কাজী অফিসে। রেজিস্ট্রী কাবিনমুলে। কাজী অফিসে কাবিননামায় সই করতে হবে । কাজি সাহেবকে আপনাদের এস এস সি-এর সার্টিফিকেট বা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দেখাতে হবে বয়স প্রমানের জন্য। বয়স অবশ্যই মেয়ের বেলায় আঠারো ও ছেলের ক্ষেত্রে একুশ বৎসর হতে হবে। প্রাপ্ত বয়স্ক ২ জন পুরুষ অথবা ১ জন পুরুষ ও ২ জন মহিলা সাক্ষী থাকতে হবে।
আর ঐ কাবিননামাই আপনাদের বিয়ের প্রধান আইনী দলিল। নোটারী পাবলিকের কাছে গিয়ে আপনি শুধু ঐ দলিলের আরও একটা সম্পূরক আইনী দলিল করে রাখলেন ভবিষ্যতে মামলা টামলায় একটু সুবিধা পেতে।
তবে জেনে রাখবেন, নোটারী পাবলিকের কাছে করা হলফনামার কোনো দাম নেই যদি আপনার রেজিস্টার্ড কাবিননামা না থাকে। কাবিননামা থাকলে আপনার বিয়ের পক্ষে আর কোনো ডকুমেন্টই লাগবেনা। কাবিননামাই সব।
বিয়ে হয়ে গেলে অনেক সময় দুই পক্ষের বাবা মা-রা মেনে নেয়, অনেক সময় মেনে নেয়না। অনেক সময় মেয়ের বাবা ক্ষেপে গিয়ে ছেলের বিরুদ্ধে মামলা করে বসে। মামলাগুলো হয় সাধারনত অপহরনপূরবক ধর্ষনের। নারী ও শিশু নির্যাতান দমন আইনে মামলার ধারাগুলো জামিন-অযোগ্য এবং আমলযোগ্য। অর্থাৎ পুলিশ এসব ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেট বা আদালতের অনুমতি ছাড়াই আসামিকে এরেস্ট করতে পারে। তাই যখন শুনবেন মামলা হয়েছে তখন থেকে কিছুদিন পালিয়ে থাকুন কারন পুলিশ ধরে নিয়ে গেলে কিন্তু প্রথমেই জামিন হবেনা। আর মানসিকভাবে শক্ত থাকুন, দুজনেই। মামলা (উক্তরূপ) হবার পর তদন্ত শুরু হবে। ভিকটিম (মেয়ের বাবার চোখে মেয়েটি এখানে ভিকটিম)-এর জবানবন্দী দিতে হবে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-এর সামনে। এটি নারী ও শিশু নির্যাতান দমন আইনের ২২ ধারার জবানবন্দি, ম্যাজিস্ট্রেট-এর চেম্বারে হয়। কেউ কোন প্রভাব খাটাতে পারেনা। এখানে মেয়েকে বলতে হবে, “আমি স্বেচ্ছায় বিয়ে করেছি, আমাকে কেউ অপহরন করেনি’’ ব্যাস। তাহলে মামলায় পুলিশ আর চার্জশীট দেবেনা। আসামি (ছেলে) অব্যাহতি পাবে।
তবে মেয়ের বাবা পুলিশকে ঘুষ দিয়ে ছেলেকে কোন ডাকাতি বা মার্ডার কেইসে গ্রেফতার দেখানোর (shown arrest) ব্যবস্থা করতে পারে। আমাদের পুলিশ সব পারে ইনশাআল্লাহ।
এক পক্ষ হিন্দু বা মুসলিম বা অন্য ধ‌র্মের হলেও, ধর্ম পরিবর্তন না করেই বিয়ে করা সম্ভব।
Special Marriage Act-III of 1872 এর আওতায়। এর জন্য কাজীর মত আলাদা ম্যারেজ রেজিষ্টার আছেন।
আমার জানা মতে পুরাতন ঢাকতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিছনে একজন রেজিষ্টার রয়েছেন। কারও প্রয়োজন হলে যেতে পারেন।

প্রবাসে মৃত্যু বরণ করলে মৃত দেহ কিভাবে দেশে আনতে হবে

প্রবাসে মৃত্যু বরণ করলে মৃত দেহ কিভাবে দেশে আনতে হবেপৃথিবীর প্রায় ১৬০টি দেশে আমাদের ১ কোটি সম্মানিত প্রবাসী কর্মী রয়েছেন। হায়াত-মৌত আমাদের হাতে নেই, যে কারও যে কোন সময় মৃত্যু হতে পারে। এ ধরণের পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কিছু জিনিষ জেনে রাখা আবশ্যক..

মৃতদেহ দেশে আনয়নঃ
বিদেশী কর্মীর মৃতদেহ দেশে প্রেরণের জন্য প্রত্যেক দেশের নিজস্ব কিছু নিয়মকানুন আছে। অনেক দেশেই সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কিছু এজেন্সি কাজটি করে থাকে। নিয়োগকারী কোম্পানী বা মৃতের স্বজন বা বাংলাদেশ এম্বেসীর চাহিদার প্রেক্ষিতে তারা কাগজপত্র প্রসেস করে মৃতদেহ বিমানে তুলে দেয়।
বাংলাদেশ এম্বেসীর শ্রম উইং (শ্রম উইং না থাকলে, কনস্যুলার উইং) ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে। সার্টিফিকেটে মৃতব্যক্তি বাংলাদেশী কর্মী কিনা, বৈধ কিংবা অবৈধ কিনা ইত্যাদিসহ বিমানবন্দরে মৃতদেহ রিসিভারের নাম উল্লেখ থাকে।
বিমানভাড়া এবং প্রসেসিং ব্যয়ঃ
সাধারণতঃ এই ব্যয় নিয়োগকারী কোম্পানী/ব্যক্তি বহন করে থাকে। অবৈধতার কারণ দেখিয়ে নিয়োগকর্তা ব্যয় বহনে অপারগতা প্রকাশ করলে, আত্মীয়-স্বজন বন্ধু-বান্ধবকে এই ব্যয় বহন করতে হয়। এ ধরনের ব্যবস্থাও না করা গেলে শ্রম উইংয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ড ব্যয়ভার বহন করে থাকে। তবে যে-ই বহন করুক না কেন, শ্রম উইংকেই সমন্বয়ের দায়িত্ব নিতে হয়।
বিমানবন্দরে মৃতদেহ গ্রহণঃ
শ্রম উইং থেকে প্রদত্ত ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেটে মৃতদেহ গ্রহণকারীর নাম উল্লেখ থাকে। রিসিভার বিষয়টি আগেই জেনে থাকেন। তবুও ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের পক্ষ থেকেও মৃতের স্বজনদের সাথে যোগাযোগ করে জানানোর চেষ্টা করা হয়। নির্ধারিত সময়ে বিমানবন্দরের কার্গোগেইটে রিসিভারের ভোটার আইডি/পাসপোর্টের ফটোকপি ও এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি জমা দিয়ে মৃতদেহ গ্রহণ করতে হয়। পাশাপাশি, মৃতদেহের সাথে প্রেরিত ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, ডেথ সার্টিফিকেট ও এয়ারওয়ে বিলসহ যাবতীয় কাগজপত্র বুঝে নিতে হয়।
বিমানবন্দর থেকে বাড়িতে মৃতদেহ পরিবহন ও দাফন বাবদ ৩৫ হাজার টাকা অনুদান গ্রহণঃ
বৈধ বা অবৈধ যে কোন বাংলাদেশী কর্মীর ওয়ারিশই এই অনুদান পাবেন।
কার্গোগেইটে মৃতদেহ গ্রহণের পর মৃতদেহ গাড়িতে রেখে কাগজপত্রগুলো নিয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কে যেতে হবে। গৃহীত কাগজপত্র সেখানে জমা দিতে হবে। অতিরিক্ত হিসেবে রিসিভারের ভোটার আইডির ফটোকপি, এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, ওয়ারিশান সনদ জমা দিয়ে চেক গ্রহণ করতে হবে।
রিসিভার যদি মৃতের মূল ওয়ারিশ (স্ত্রী, পিতা, সন্তান) ছাড়া অন্য কেউ হন, সেক্ষেত্রে চেক গ্রহণের জন্য ক্ষমতা পত্রের প্রয়োজন হবে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না এনে থাকলে, পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে যে কোন সময় কাগজপত্রসহ এসে চেক নিয়ে যেতে হবে।
ক্ষতিপূরণ বাবদ ৩ লক্ষ টাকার অনুদানঃ
যেসব কর্মী বৈধভাবে বিদেশ গিয়েছিলেন, তাদের সবার জন্য এটি প্রযোজ্য। বৈধভাবে বিদেশ গিয়ে পববর্তীতে অবৈধ হলেও পাবেন। এ ক্ষেত্রে মূলতঃ বহির্গমন রেকর্ড দেখা হয়। বহির্গমন বৈধ হলেই তাঁর ওয়ারিশ এ ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এ জন্য সাধারণতঃ পৃথকভাবে আবেদন করতে হয়না। মৃতদেহ পরিবহন ও দাফন বাবদ ৩৫ হাজার টাকার চেক গ্রহণের সময় যে কাগজগুলো জমা দিতে হয় বা দেখাতে হয়, সেগুলোর কপি প্রবাসী কল্যাণ ডেস্ক থেকে ঐ দিনই ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডে অনলাইনে প্রেরণ করা হয়। কল্যাণ বোর্ড মৃতের বহির্গমন বৈধতা যাচাই অন্তে সঠিক পেলে স্থানীয় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের মাধ্যমে ওয়ারিশান ও বন্টননামাসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে তিন লাখ টাকার চেক স্থানীয় অফিসের মাধ্যমে মৃতের ওয়ারিশকে প্রেরণ করে থাকে।
** এই প্রসেস না-জানা থাকার কারণে কেউ অনুদান গ্রহণ না করে থাকলে, তিনমাসের মধ্যে বিমানবন্দরস্থ প্রবাসী কল্যাণ থেকে ৩৫ হাজার টাকার চেক গ্রহণ করতে পারবেন এবং যথানিয়মে তিন লক্ষ টাকার অনুদানের কার্যক্রম শুরু হয়ে যাবে। তিন মাস পার হয়ে গেলে প্রথম থেকে মোট এক বছরের মধ্যে স্থানীয় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি অফিসের সহকারী পরিচালক বরাবর ওয়ারিশ কর্তৃক উভয় অনুদানের জন্য আবেদন করতে হবে।

বিদেশে বাংলাদেশের দূতাবাস যেসব সেবা দিয়ে থাকে

বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসীদের যেসব সেবা দেয়;- ১. বিদেশে পাসপোর্ট হারিয়ে গেলে বা চুরি হয়ে গেলে এমন অবস্থায় কারও জরুরি ভিত্তিতে বাংলাদেশে যাওয়ার প্রয়োজন হলে সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্য ট্রাভেল ডকুমেন্টের ব্যবস্থা করে দেয়। ২. পাসপোর্টের মেয়াদ উত্তীর্ণ হলে তা নবায়ন করে দেয়। ৩. মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের আবেদন গ্রহণ এবং নতুন মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট করে দেয়। ৪. মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য সাময়িক বা স্থায়ী জন্ম নিবন্ধন সনদ প্রদান করে।

৫. বিদেশে বসবাসকারী বাংলাদেশি নাগরিকদের সে দেশে জন্মগ্রহণ করা সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের ব্যবস্থা করে এবং নবাগত শিশুর পাসপোর্ট করে দেয়।
৬. বিভিন্ন কারণে বিদেশে কারাদÐপ্রাপ্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের আইনি সহায়তা দেয়।
৭. বিদেশে কেউ মারা গেলে ওই দেশ থেকে লাশ পাঠাবার প্রশাসনিক কাগজপত্র প্রদান এবং আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে থাকে।
৮. জন্মসূত্রে বাংলাদেশি নাগরিক কিন্তু পরবর্তীতে অন্য কোনো দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে থাকলে তাদের জন্য পাসপোর্টে বিনা ভিসা সিলমোহর (নো ভিসা রিকোয়ার সিল) দেওয়ার ব্যবস্থা করে।
৯. অন্য দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের নাগরিকত্ব এমনিতেই বাতিল হয়ে যায়। এমন অবস্থায় বাংলাদেশে দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণে আগ্রহীদের দ্বৈত নাগরিকত্ব সনদের ব্যবস্থা করে দেয়।
১০. বিদেশে বসবাসকালে ওই দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, পড়াশোনা বা যে কোনো প্রয়োজনে কোনো কাগজপত্র দাখিলের প্রয়োজন হলে সেসব কাগজে প্রয়োজন অনুযায়ী সত্যায়িত করা, পাওয়ার অব অ্যার্টনি, হলফনামাসহ নানাবিধ কাজ করে দেয়।
১১. বিদেশে চাকরি করতে গিয়ে ওই দেশের মালিকদের দ্বারা প্রতারিত হলে বা কোনো সমস্যায় পড়লে প্রয়োজনীয় অভিযোগ করা যায় এবং পরামর্শ গ্রহণ করা যায়।
১২.বাংলাদেশ থেকে প্রাপ্ত আন্তর্জার্তিক ড্রাইভিং লাইসেন্স ভেরিফিকেশন করে দেয়।
১৩. পুলিশ কিøয়ারেন্স সার্টিফিকেটের আবেদন গ্রহণ।
১৪. বাংলাদেশ মিশন এবং কনস্যুলেট আরও কী কাজ করে তা জানতে প্রত্যেক মিশনের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন বা ফোন করেও জেনে নিতে পারেন।

এয়ারপোর্টে ভোগান্তির শিকার হলে করনীয়

আপনি দেশে যাচ্ছেন অথবা দেশ থেকে ফিরে আসছেন। এই আসা যাওয়ার পথে আপনাকে এয়ারপোর্টে কাস্টমস, ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার মুখোমুখি হতে হয়।ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিমানবন্দরে নানা ধরনের হয়রানির অভিযোগ করে থাকেন অনেক যাত্রী।আপনি যদি এ ধরনের কোন ঘটনার শিকার হয়ে থাকেন তাহলে আপনি নিচের ঠিকানায় গিয়ে, ফোন করে বা ইমেইলে আপনার অভিযোগ জানাতে পারেন।
লক্ষ্য করুন : ঢাকা এয়ারপোর্টসহ বাংলাদেশের সব এয়ারপোর্টে এখন যাত্রীদের যে কোন ধরনের হয়রানি, প্রতারনাসহ যে কোন সমস্যায় সার্বক্ষনিক সাহায্য করার জন্য দুজন করে মেজিস্ট্রেট কাজ করছেন। অনিয়ম দর্নীতি দমনে আপনি চাইলে তাদের সাহায্য নিতে পারবেন। সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা ১২ মাসই তাদের সেবা আপনি গ্রহন করতে পারেন। নিচে ঢাকা এয়ারপোর্টে কর্মরত মেজিস্ট্রেটদের চারটি মোবাইল ফোন নম্বর দেয়া হলো। এগুলোতে ফোন করে আপনি আপনার প্রয়োজনে তাদেরকে পাশে চাইলেই তারা ছুটে আসবেন।
মোবাইল নম্বর গুলো হচ্ছে- ০১৮৬৬৫৪৪৪৪৪ ০১৭৮৭৬৬১১৪৪ ০১৮৬৬৫৬৬৬৬ ০১৭৮৭৬৬১১৬৬
এছাড়া ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস বিভাগের নম্বরও দেয়া হলো আপনি চাইলে সংশ্লিষ্ট বিভাগেও অভিযোগ করতে পারেন।
ইমিগ্রেশন সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে এই নম্বরে ফোন করুন OC Immigration +880-2-8914226, +88-01713373073 Addl. SP Immigration +88-01013373072 SS Immigration +88-01713373071
অনলাইনে অভিযোগ করতে নিচের লিংকে ক্লিক করুন
http://www.immi.gov.bd/complain.php
কাস্টমস সংক্রান্ত অভিযোগ জানাতে আপনি যদি এয়ারপোর্টে কাস্টমস বিভাগের কোন কর্মকর্তা-কর্মচারি দ্বারা ভোগান্তির শিকার হন তাহলে আপনি নিম্নের ঠিকানায় স্বশরীরে গিয়ে, ফোন করে বা ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগ করতে পারেন।
Customs, Excise & VAT Commissionerate, Dhaka(North)
Address :   House-6, Sonargaon & Janapath Road, Sector-11, Dhaka
Telephone :   02-8915165,8912664
Fax  :   02-8913433
Email :   commdkn@yahoo.com

বিদেশে যাওয়ার আগে যে বিষয় গুলো না জানলেই নয়?

কোথায় যাবেন? বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে যান তাদের একটি বড় অংশই হুট করে বিদেশে যাবার সিদ্ধান্ত নেন। তারা ভাবেন বিদেশে গেলেই সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে, ঘুরে যাবে ভাগ্যের চাকা। কিন্তু বিষয়টি তেমন নয়। কাজেই বিদেশে যাওয়ার আগে সময় নিয়ে ভালোভাবে চিন্তাভাবনা করতে হবে। প্রথমেই ভাবতে হবে আপনি কোন কাজ জানেন। এরপর ভাবুন কোন দেশে যাবেন। কতো খরচ হবে। খরচের এই টাকা কোথা থেকে আসবে। ভাবুন যেই কাজে যাচ্ছে তাতে বেতন কতো? সব খরচ বাদ দিয়ে আপনার কতো থাকবে? কত বছরে আপনি খরচের টাকা তুলতে পারবেন। এসব চিন্তা ভাবনা করে তবেই বিদেশে যাবার সিদ্ধান্ত নিন। বাংলাদেশ থেকে চাকুরি নিয়ে যারা বিদেশে গেছেন তাদের মধ্যে ৯০ ভাগেরও বেশি গেছেন মধ্যপ্রাচ্যে। বিএমইটির হিসাব অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৮০ লাখ কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে ২৫ লাখই গেছেন সৌদি আরবে। ২১ লাখ গেছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে। এছাড়া মালয়েশিয়ায় সাত লাখ, কুয়েতে পাঁচ লাখ, ওমানে ছয় লাখ, সিঙ্গাপুরে পৌনে চার লাখ, বাহারাইনে আড়াই লাখ ও লিবিয়ায় প্রায় এক লাখ কর্মী গেছেন। এগুলোই মূলত বাংলাদেশের প্রধান শ্রমবাজার। এর বাইরে মরিশাস, লেবানন, জর্ডান, দক্ষিণ কোরিয়া, ব্রুনেই এবং ব্রিটেন, ইতালি, গ্রিস, রুমানিয়াসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে কিছু মানুষ যাচ্ছেন। এই দেশগুলোকে বলা হয় শ্রম গ্রহণকারী দেশ। এবার আপনি কোন দেশে যাবেন ভেবে নিন। তবে একটি প্রশ্ন সব সময় মনে থেকেই যায়? আপনি কিভাবে আগে থেকে বিদেশে যাওয়ার বিষয়ে বিস্তারিত এবং সঠিক ও বাস্তব তথ্য গুলো জানতে পারবেন? কারন দেশে বিভিন্ন এজেন্ট বা দালাল চক্র সবসময় মিথ্যা ভরসা দিয়ে থাকে। আপনাদের এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের কাছে রয়েছেঃ বন্ধুরা আপনারা জেনে খুশী হবেন যে, আমিওপারি ইতালি থেকে পরিচালিত এবং সমগ্র ইউরোপ জুড়ে আমাদের টিম রয়েছে। এবং যাদের মধ্যে সবাই দীর্ঘদিন যাবত ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বসবাস করে আসছেন। এবং আমরা সকলে মিলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যে আমাদের এই প্রবাস জীবনের এই বাস্তব অভিজ্ঞতা গুলো আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। জেনো আপনারা ইউরোপ তথা বিদেশের যেখানেই যান!!আমাদের টিম এর মাধ্যমে পরিপূর্ণ তথ্য জেনে নিতে পারেন এবং দালাল চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন।
প্রয়োজন প্রশিক্ষণ বিদেশে যাওয়ার আগে ভাবতে হবে, কোন কাজে আপনার দক্ষতা বেশি। কোন কাজে নিজেকে যোগ্য মনে করেন। এরপর খোঁজ নিন কোন দেশে আপনার কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি, সেই দেশ এখন কর্মী নিচ্ছে কিনা। ঢাকার ১৩০ নিউ ইস্কাটন রোডের বায়রা ভবন, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, সরকারি জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল (৭১-৭২ এলিফ্যান্ট রোড) ও দৈনিক পত্রিকাগুলোর মাধ্যমে বিদেশে নিয়োগের খবরাখবর জানা যাবে। এবং আমিওপারি সাইতে চোখ রাখলেও জানতে পারবেন। বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে যান তাদের পেশাজীবী, দক্ষ, আধাদক্ষ এবং অদক্ষ এই চারটি শ্রেনীতে ভাগ করা হয়। বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত যারা বিদেশে গেছেন তাদের মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি অদক্ষ শ্রমিক। পেশাজীবীর সংখ্যা এক ভাগেরও কম। জনশক্তি রপ্তানিকারকদের সংগঠন বায়রার সভাপতি আবুল বাশার বলেন, বাংলাদেশ থেকে যারা বিদেশে যেতে চায় তাদের বেশির ভাগই অদক্ষ শ্রমিক। কিন্তু তারা একটু প্রশিক্ষণ নিলেই দক্ষ হয়ে উঠতে পারে। আর দক্ষতা বাড়লে তাদের বেতনও অনেক বেড়ে যাবে। কাজেই আপনি যে কাজে যেতে চাইছেন সেই কাজে দক্ষতা অর্জন করুন। এরপর বিদেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিন। বিএমইটির পরিচালক (প্রশিক্ষণমান ও পরিকল্পনা) নূরুল ইসলাম জানিয়েছেন, বিদেশগামীদের প্রশিক্ষণ দিতে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরকারের কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) রয়েছে। সেখানে নানান ধরনের কাজের প্রশিক্ষণ নেওয়া যায়। এসব প্রশিক্ষণ নিয়ে কেউ বিদেশে গেলে তাঁর দক্ষতা যেমন বাড়বে তেমনি চাহিদাও বাড়বে।
পাসপোর্ট পাসপোর্ট হলো সরকারের দেওয়া পরিচিতপত্র যার মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যাক্তির জাতীয়তার পরিচয় প্রদান করার পাশাপাশি তাকে দেশের বাইরে যাবার অনুমতি দেওয়া হয়। আপনি যে দেশেই যেতে চান না কেন, প্রথমেই দরকার নিজের পাসপোর্ট। পাসপোর্টের ফরম পাওয়া যাবে পাসপোর্ট অফিস কিংবা ওয়েবসাইটেও। http://www.dip.gov.bd/এই ঠিকানায় মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এমআরপি) ফরম পাওয়া যাবে। একটি বিষয় মনে রাখুন, এখন আর হাতে লেখা পাসপোর্ট নিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ নেই। কাজেই অবশ্যই এমআরপি করুন। এমআরপি পাসপোর্ট পাওয়ার প্রক্রিয়া অনেক সহজ, কাজেই দালালের সহায়তা নেওয়ার কিছু নেই। সরাসরি নিকটস্থ পাসপোর্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।

কীভাবে চাকুরি পাবেন, কতো খরচ অভিবাসন প্রক্রিয়ার সাথে বাংলাদেশের যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত সেগুলো হলো, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রনালয়, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি), সরকারি একমাত্র জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান বোয়েসেল এবং বেসরকারি প্রায় এক হাজার রিক্রটিং এজেন্সি যাদের প্রত্যেকের একটি করে লাইসেন্স নম্বর আছে। এর বাইরে আপনার বন্ধুবান্ধব ও আত্মীয়স্বজন আপনাকে বিদেশে নিতে সহায়তা করতে পারে। তবে অবশ্যই কোনো দালালের সহায়তা নেবেন না। বিএমইটির পরিচালন নূরুল ইসলাম জানান, বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিসা বা অন্যান্য সার্বিক সহযোগিতার জন্য মাঝখানের দালাল এড়িয়ে সরাসরি বৈধ কোনো রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। আর বিদেশ যেতে আগ্রহীরা আমাদের জেলা কার্যালয়ে গিয়ে নাম নিবন্ধন করতে পারেন। এমনকি তারা মুঠোফোনেও বিদেশে যাওয়ার জন্য নাম নিবন্ধন করতে পারেন। বাংলাদেশ থেকে কোন দেশে যেতে কতো খরচ হবে সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত কোন নীতিমালা করেনি সরকার। বিষয়টি নিয়ে কাজ চলছে। তবে মালয়েশিয়ায় ৮৪ হাজার টাকা অর লিবিয়ায় ৩৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিলো যদিও বিষয়টি দেখভালের কোনো সুযোগ নেই। এক্ষেত্রে একটি সহজ উপায় হলো, যতো বেশি মধ্যসত্ত্বভোগীদের এড়িয়ে চলতে পারবেন ততোই খরচ কমবে। সরাসরি যদি কোনো রিক্রটিং এজেন্সির সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় কিংবা বোয়েসেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করা যায় তাহলে খরচ কম পড়বে। তবে খরচ কতো পড়বে তার চেয়েও বেশি জরুরি আপনি কতো টাকা বেতনে যাচ্ছেন। একটি বিষয় মাথায় রাখুন যতো টাকা খরচ করে যাচ্ছেন সে অনুযায়ী বেতন পাবেন কিনা। কতো দিনে সেই খরচ উঠবে। আর একটি বিষয় মনে রাখবেন, টাকা লেনদেন অবশ্যই ব্যাংকে বা রশিদের মাধ্যমে করবেন। পারলে সাক্ষী রাখবেন। রশিদ না রাখতে পারলে যতো টাকাই দিন না কেন তার কোনো বৈধতা থাকে না।

ত্যাজ্য বল্লেই কি পুত্র ত্যাজ্য হয়?

সিনেমায় ত্যাজ্যপুত্র কথাটি সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। কিন্তু বাস্তব জীবনও সিনেমার থেকে কম নাটকীয় নয়। ফলে অনেক সময় অভিভাবক ছেলের ওপর অসন্তুষ্ট হয়ে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করেন। অনেকে হলফনামার মাধ্যমে নোটারি পাবলিকের সামনে সন্তানকে ত্যাজ্য বলে স্বীকৃতি দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমাদের দেশের নাটক-সিনেমাতে তো ঘোষণা করামাত্রই পুত্র ত্যাজ্য হয়ে যায়।
সমাজেও ত্যাজ্যপুত্র ধারণাটি বেশ ভালোভাবেই প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। কিন্তু প্রচলিত আইনে ত্যাজ্যপুত্রের ঘোষণার কোনো ভিত্তি নেই। এটি নিছক একটি ভ্রান্ত ধারণা। ত্যাজ্য বলে ঘোষণা করলেই পুত্র ত্যাজ্য হয়ে যায় না। এটি লোকমুখে প্রচলিত একটি শব্দ। আইন একে বৈধতা দেয় না।
আমাদের সমাজে প্রচলিত ধারণা হচ্ছে, যদি কোনো মা-বাবা তাঁর সন্তানকে ত্যাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেন তবে সেই সন্তান চিরতরে তাঁর মা-বাবার সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। অনেক সময় দেখা যায় যে বাবা তাঁর সন্তানকে ত্যাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেন এবং হলফনামা করে লিখে দেন যে তাঁর মৃত্যুর পর সেই সন্তান সম্পত্তির কোনো অংশীদার হবেন না। এ ধরনের ঘোষণার আদৌ কোনো আইনি ভিত্তি নেই। মুসলিম পারিবারিক আইনে স্পষ্টভাবে বলে দেওয়া হয়েছে কারা সম্পত্তির উত্তরাধিকার হবেন এবং তাঁদের অংশ কতটুকু হবে। মুসলিম আইন অনুযায়ী জন্মসূত্রেই কোনো সন্তান তাঁর পরিবারের সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার অর্জন করেন এবং তাঁদের এ অধিকার কোনোভাবেই খর্ব করা যায় না।
তবে কোনো মা-বাবা দান, উইল বা বিক্রয়ের মাধ্যমে তাঁদের সম্পত্তি যে কারও কাছে হস্তান্তর করতে পারেন। এখানে মনে রাখতে হবে মুসলিম আইনে উইলের দ্বারা এক-তৃতীয়াংশের বেশি হস্তান্তর করা যায় না এবং ওই ব্যক্তির মৃত্যুর পর তা কার্যকর হবে। জীবিতকালে কোনো মা-বাবা তাঁদের সম্পত্তি অন্য কাউকে যথাযথ উপায়ে দান না করে গেলে কিংবা বিক্রয় করে না গেলে মৃত্যুর পর তাঁদের সন্তানেরা অবধারিতভাবেই উত্তরাধিকারী হিসেবে সেই রেখে যাওয়া সম্পত্তির অংশীদার হবেন।
কিন্তু জীবিতকালে শুধু ত্যাজ্যপুত্র বলে ঘোষণা করে ভবিষ্যতে সন্তানেরা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবেন বলে দিলেই সন্তানেরা ত্যাজ্য হয়ে যাবেন না। সন্তানেরা অবশ্যই বাবা-মায়ের সম্পত্তির অংশীদার হবেন। যেকোনো দলিল সম্পাদন কিংবা হলফনামার মাধ্যমে ত্যাজ্য করার ঘোষণা আইনের চোখে অচল এবং আদালতের মাধ্যমে বলবৎ করার সুযোগ নেই। যদি এমন হয় বাবা-মা ত্যাজ্যপুত্র বলে সন্তানদের ঘোষণা দিয়ে গেছেন এবং এ জন্য অন্য অংশীদারেরা তাঁদের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করার চেষ্টা করছেন তাহলে সন্তানেরা আইনের আশ্রয় নিতে পারেন।
চাইলে দেওয়ানি আদালতে বাবা-মায়ের করা দলিলটি বাতিল চেয়ে মোকদ্দমা দায়ের করতে পারেন। কোনো বাবা-মা যদি তাঁদের অবাধ্য সন্তানকে কোনো সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে চান তাহলে জীবিতাবস্থায় ওই সম্পত্তি অন্য কাউকে দান করে কিংবা বিক্রি করে সম্পত্তির দখল ছেড়ে দিয়ে যেতে হবে। মনে রাখতে হবে যেটুকু সম্পত্তিই বাবা-মা নিজের নামে রেখে যান না কেন তাঁদের মৃত্যুর পর তাঁর বৈধ উত্তরাধিকারীরা এ সম্পত্তির অংশীদার হবেন। এ থেকে জীবিত অবস্থায় কাউকে বঞ্চিত করার ঘোষণা মুসলিম আইন অনুযায়ী করা যাবে না।

বিয়ের পূর্বে হবু স্ত্রী সম্পর্কে যে বিষয়গুলি জেনে নেয়া জরুরি

দাম্পত্য মানেই একজন মানুষের সাথে নিজের বাকিটা জীবন কাটানো। যদিও আজকাল ডিভোর্স খুব সহজ একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে, কিন্তু তবুও যতটা সোজা ভাবা হয় বিষয়গুলো আসলে ততটা সহজ নয়। স্ত্রী এমন কেউ নন যে পছন্দ না হলেই বদলে ফেলবেন। বরং সে পরিস্থিতি যেন না হয়, সে কারণে বিয়ের আগেই কিছু খোঁজখবর করে নেয়া ভালো। বিয়েতে কিছু বিষয় একটু ভালো করে জেনে নেবেন। এতে সব শেষে লাভ হবে আপনাদের দুজনেরই।

অতীত সম্পর্কের ব্যাপারেও যথেষ্ট ধারণা রাখুন :- বিয়ের পর স্ত্রীর অতীত থেকে একজন প্রেমিক বা ভালোবাসার পুরুষ উঠে আসলে নিশ্চয়ই আপনার ভালো লাগবে না? কিন্তু সেই সম্পর্ক যদি “সারপ্রাইজ” হিসাবে দেখা দেয় বিয়ের পর, তাহলে সমস্যা। তাই আগেই জেনে রাখুন স্ত্রীর পুরনো সম্পর্কের ব্যাপারে, যেন ভবিষ্যতে এই ব্যাপারটি আর আপনাদের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি করতে না পারে। সবচেয়ে ভাল হয় যে সকল ছেলে বা মেয়ে বিবাহ পূর্ব অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক রাখে তাদের পরিহার করা।

জেনে নিন তাঁর পারিবারিক ইতিহাস :- শুধু পরিবারের সবার নাম-পরিচয়ই নয়, নিকট আত্মীয়দের পেশা এবং অন্যান্য জরুরী তথ্যগুলো জেনে রাখুন। সাথে এটাও জেনে রাখুন যে কোন বংশানুক্রমিক ব্যাধি আছে কিনা। পরিবারে কোন অপরাধের রেকর্ড বা অন্য কোন অসামাজিক বিষয়ের রেকর্ড আছে কিনা। পরিবার গঠন ও দাম্পত্য সম্পর্কে তিনি কী ভাবেন :- বিয়ের আগেই এই বিষয়গুলো পরিষ্কার করে নেয়া দরকার। কারণ সংসার করবেন আপনারা, পরিবার গঠন করবেন আপনারা। এক্ষেত্রে পরস্পরের মূল্যবোধ যদি না মেলে, সেক্ষেত্রে এই লম্বা জীবন পার করাটা খুবই কষ্টকর হয়ে দাঁড়াবে। তাই আগেই জেনে নিন দাম্পত্য সম্পর্কে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী।

তাঁর অসুস্থতা সম্পর্কেও জানুন :- এই বিষয়টি জানার দিকে আমরা খুব একটা মনযোগ দেই না। কিন্তু নারী ও পুরুষ উভয়েরই পরস্পরের মেডিকেল হিস্ট্রি জেনে রাখা উচিত। একসাথে চলার পথে অসুখ বিসুখের আক্রমণ হবেই, জীবনে ঘটতে পারে নানান দুর্ঘটনাও। তাই দুজনেরই শারীরিক যে কোন সমস্যা ও মেডিকেল হিস্ট্রি জেনে রাখা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

তাঁর বন্ধুদের চিনে নিন :- হবু স্ত্রীর বন্ধু বান্ধবদের সাথে পরিচিত হয়ে নিন। এতে খুব পরিষ্কার ধারণা পাবেন স্ত্রীর পছন্দ-অপছন্দ এবং তাঁর পরিচিত সার্কেল সম্পর্কে। এবং জানতে পারবেন এমন অনেক অজানা বিষয় যেগুলো অন্য কোনভাবে জানা সম্ভব না। স্ত্রীর ধ্যান ধারণার মূল্যায়ন করতে সুবিধে হবে আপনার।

এবার আসুন আরো বাস্তবতার গভীরে যাই – আপনার হবু স্ত্রী ধর্মীয় বিষয়ে কতটা জ্ঞান রাখেন এবং সে অনুযায়ী কতটা চলাফেরা করেন সে দিকে বিশেষ দৃষ্টি রাখুন। শুধু মাত্র এই বিষয়টির প্রতি যদি বিশেষ গুরত্ব দেন তাহলেও আপনি বিয়ের পর অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঝামেলা থেকে অনায়াসেই রেহাই পাবেন !

তালাক ও দেনমোহর সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর

প্রশ্নঃ আমি ( ২০ )একটি প্রায়ভেট কলেজে পড়ছি ।গত আগস্ট মাসের ২৮ তরিখে অনেকটা জোরপূর্বক ৫৫০০০০ টাকা দেনমহর ধার্য করে আমার সাথে একটি মেয়ের ( ১৪) বিয়ে দিয়ে দেয় তার পরিবার । কিন্তু আমার পরিবার কিছুতেই এ বিয়ে মেনে নিচ্ছেনা । এমন কি পড়াশুনার খরচও দিচ্ছে না । আর মেয়েটার সাথে আমার সম্পর্ক ও ভালনেই তাই তাকে তালাক দিতে চাচ্ছি । এখন কি আমাকে সমস্ত দেনমহর টাকা একসাথে দিতে হবে ।

উত্তরঃ
আইন অনুযায়ী দেনমোহর স্বামীকে অবশ্যই পরিশোধ করতে হবে। কারণ, দেনমোহর সব সময়ই স্বামীর ঋণ। দেনমোহর দুই প্রকার। একটি তাৎক্ষণিক দেনমোহর, যা স্ত্রীর চাওয়ামাত্র পরিশোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে স্ত্রী তাৎক্ষণিক দেনমোহর না পাওয়া পর্যন্ত স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য জীবন শুরু করতে অস্বীকার করতে পারেন। আরেকটি হচ্ছে বিলম্বিত দেনমোহর। বিলম্বিত দেনমোহর বিবাহবিচ্ছেদ অথবা স্বামীর মৃত্যুর পর পরিশোধ করতে হয়। সাধারণত দেনমোহরের কিছু পরিমাণ বিয়ের সময় তাৎক্ষণিক দেনমোহর হিসেবে দেওয়া হয় এবং তা কাবিননামায় লিখিত থাকে। বাকিটা বিলম্বিত দেনমোহর হিসেবে ধরা হয়। তবে স্বামীকে অবশ্যই দেনমোহর পরিশোধ করতে হয়। আপনার ক্ষেত্রেও একই কথা। তালাক দিলে দেনমোহর যদি সম্পূর্ণ কিংবা আংশিক বাকি থাকে আইন অনুযায়ী যদি তা পরিশোধ করে দিতে হবে।

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে হয় কেন?

বিবাহ রেজিস্ট্রেশন কী এবং কেন?
বিবাহ রেজিস্ট্রেশন হচ্ছে সরকারিভাবে বিবাহকে তালিকাভুক্তি করা। সরকারের নির্ধারিত ফরমে বিবাহের তথ্যবলী দিয়ে এই তালিকাভূক্তি করতে হয়। তালিকাভূক্তি ফরমটিকে কাবিননামাও বলে। ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইন অনুযায়ী প্রতিটি বিবাহ সরকার নির্ধারিত কাজী বা নিকাহ্ রেজিস্ট্রার দ্বারা রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) আইনটি ২০০৫ সালে সংশোধনী আনা হয় এবং বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না করাকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়।
ওই সংশোধনীতে বলা হয়েছে, নিকাহ্ রেজিস্ট্রার বা কাজী বিবাহ সম্পন্ন হবার সঙ্গে সঙ্গেই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করবেন অথবা তিনি ছাড়া অন্য কেউ বিবাহ সম্পন্ন করলে ৩০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিকাহ্ রেজিস্ট্রার বা কাজীর নিকট বিবাহের তথ্য প্রদান করতে হবে এবং কাজী উক্ত তথ্য প্রাপ্তির সঙ্গে সঙ্গে বিবাহ রেজিস্ট্রি করবেন। যদি কেউ বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের এসব বিধান লঙ্ঘন করেন তাহলে তার ২ (দুই) বছর বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা ৩০০০ (তিন হাজার) টাকা জরিমানা বা উভয়দণ্ড হতে পারে। আইন অনুযায়ী কেউ যদি রেজিস্ট্রেশন বিষয়ে ভুক্তভোগী হয়ে থাকেন তবে প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের নিকট অভিযোগ দায়ের করতে পারেন।
উল্লেখ্য যে, রেজিস্ট্রেশন না হলে বিবাহ বাতিল হয় না তবে আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত হবার সম্ভাবনা থাকে।
খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও ১৮৭২ সালের খ্রিস্টান ম্যারেজ এ্যাক্ট অনুযায়ী খ্রিস্টানদের বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রে হিন্দু পারিবারিক আইন অনুযায়ী হিন্দু বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের কোনো বিধি বিধান নেই। তবে ২০১২ সালে প্রণীত “হিন্দু বিবাহ নিবন্ধন আইন” অনুযায়ী বিবাহ নিবন্ধনের বিধান থাকলেও তা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ক্ষেত্রেও এরূপ বিধান নেই। এসব ক্ষেত্রে ভবিষ্যত প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনা করে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা করে রাখা যেতে পারে।
কখন এবং কিভাবে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে হয় : ২০০৫ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিস্ট্রেশন) সংশোধিত আইন অনুযায়ী বিবাহ সম্পন্ন হবার সাথে সাথে বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করতে হয়। তবে নিকাহ রেজিস্ট্রার ছাড়া বিবাহ সম্পন্ন হলে ৩০দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিকাহ রেজিস্ট্রারের নিকট বিবাহ রেজিস্ট্রি করতে হয়। রেজিস্ট্রি করতে রেজিস্ট্রেশন সরকারি ফি দিতে হয়। দেনমোহরের পরিমাণের উপর ভিত্তি করে রেজিস্ট্রেশন ফি নির্ধারিত হয়। ধার্য্যকৃত দেনমোহরের প্রতি হাজার বা তার অংশবিশেষের জন্য ১০ টাকা হারে রেজিস্ট্রেশন ফি দিতে হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন ফি এর মোট পরিমাণ ১০০ টাকার কম হবে না এবং ৪০০০ টাকার উপর হবে না। এই ফি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এবং পরিবর্তন হয়ে থাকে। রেজিস্ট্রেশন ফি পরিশোধের দায়িত্ব বরপক্ষের।
আইন অনুযায়ী বিবাহের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় বা শর্ত যেমন, বর কনের বয়স, উভয়ের সম্মতি, দেনমোহর, তালাক প্রদানের ক্ষমতা ইত্যাদি পূরণ সাপেক্ষে কাজী বা নিকাহ রেজিস্ট্রার বিবাহ রেজিস্ট্রি করবেন। খ্রিস্টান বিবাহের ক্ষেত্রে যিনি বিবাহ সম্পাদন করবেন তিনিই বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করবেন। রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হবার পর কাজী উভয়পক্ষকে রেজিস্ট্রেশন ফরম বা কাবিননামার সত্যায়িত কপি প্রদান করবেন।
বিবাহ রেজিস্ট্রেশনের সুফল-কুফল : বিবাহ রেজিস্ট্রেশন করলে আইনগত কিছু সুফল পাওয়া যায় কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না করলে কুফলও রয়েছে অনেক, যেমন রেজিস্ট্রেশনের ফলে,
১) উভয় পক্ষ বিবাহ অস্বীকার করার আইনত সুযোগ থাকেনা এবং এর দ্বারা সামাজিক ও পারিবারিক দায়বদ্ধতা আরোপিত হয়। ২) রেজিস্ট্রেশনের ফলে সম্পত্তিতে উত্তরাধিকার নির্ণয় সহজ হয়। ৩) স্ত্রী তার প্রাপ্ত দেনমোহর ও ভরণপোষণ আদায় বা দাবি করতে পারে। ৪) সন্তানের অভিভাবকত্ব নির্ণয় করতে সহজ হয়। ৫) স্বামী দ্বিতীয় বিবাহের জন্য উদ্যোগী হলে স্ত্রী আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারেন। ৬) রেজিস্ট্রেশনের ফলে বাল্য বিবাহ রোধ সম্ভব হয়। ৭) রেজিস্ট্রেশনের ফলে স্ত্রী ডিভোর্স দেয়ার ক্ষমতা প্রাপ্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন না হলে স্বামী বা স্ত্রীর আইনগত বৈধতা প্রমাণ করা কষ্টসাধ্য, অনেক ক্ষেত্রে প্রমাণ করা যায় না। রেজিস্ট্রেশন না হওয়ার ফলে স্বামী অথবা স্ত্রী উভয়ই আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত বা প্রতারিত হবার সম্ভাবনা দেখা দেয়। আবার, রেজিস্ট্রেশন না করা আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে। মোট কথা, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন একদিকে যেমন বাধ্যতামূলক অন্যদিকে এটি একটি সামাজিক এবং পারিবারিক প্রামাণ্য দলিল।

তালাক নিয়ে কিছু প্রশ্নের উত্তর

রশ্ন ১. মুখে মুখে তালাক দিলে তালাক কার্যকর হবে কি ?
উত্তর. না, ১৯৭৪ সালের মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিষ্টেশন আইন অনুযায়ী কাজীর মাধ্যমে তালাক দিতে হবে এবং তালাকের নোটিশ স্বামী কর্তৃক স্ত্রীকে অথবা স্ত্রী কর্তৃক স্বামীকে এবং স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ/পৌরসভা/সিটি কর্পোরেশনকে পাঠাতে হবে।
প্রশ্ন ২. স্বামী কতৃর্ক স্ত্রীকে নোটিশ প্রদান ছাড়া তালাক দিলে তালাক কি কার্যকর হবে ?
উত্তর. হ্যাঁ, তালাক কার্যকর হবে, তবে নোটিশ প্রদান না করায় স্বামীর ১ বছরের কারাদন্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয়দন্ড হবে।
প্রশ্ন ৩.স্বামী কি স্ত্রীকে কোন কারণ ছাড়াই তালাক দিতে পারেন ?
উত্তর. হ্যাঁ, স্বামী-স্ত্রীকে কোন প্রকার কারণ ছাড়াই তালাক দিতে পারেন।
৪. স্ত্রী কি স্বামীকে কোন কারণ ছাড়া তালাক দিতে পারেন ?
উত্তর. না, আইনে উল্লেখিত কারণ ছাড়া স্ত্রী স্বামীকে তালাক দিতে পারেন না।
৫. গর্ভাবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দিলে তালাক কি কার্যকর হয় ?
উত্তর. না, গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে তালাক কার্যকর হয় না। সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ প্রদান করে ৯০দিন পর তালাক কার্যকর করতে হয়।
৬. বিচ্ছেদপ্রাপ্ত/ তালাকপ্রাপ্ত স্বামী- স্ত্রী কি পুনরায় ঘর সংসার করতে পারেন? 
উত্তর. ১৯৬১ সনের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৭ (৬) ধারা অনুসারে তালাকের মাধ্যমে কোন বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটলে, বিচ্ছেদপ্রাপ্ত/ তালাকপ্রাপ্ত স্বামী-স্ত্রী পুনরায় একত্রে ঘর- সংসার করতে চাইলে নতুন করে নিয়ম অনুসারে বিয়ে করতে হবে; তবে পুনর্বিবাহ করে ঘর-সংসার করায় আইনতঃ কোন বাধা নেই।

তালাক প্রদানের পূর্বে করনীয়

দাম্পত্য জীবনে স্বামী স্ত্রী’র মধ্যে বিবাধ-বিরোধ মনোমালিন্য দেখা দিতেই পারে। স্বামী স্ত্রীর মাঝে এ ধরনের বিরোধ দেখা দিলে তাদের জন্য নসীহত রয়েছে যে “আর তাহলে প্রত্যেকেই যেন অপরের ব্যাপারে নিজের মধ্যে ধৈর্য্য ও সহ্য শক্তি রক্ষা করে অপরের কোন কিছু অপছন্দনীয় হলে তা ঘৃনা হলেও সে যেন দাম্পত্য জীবন রক্ষার সার্থে তা অকপটে বরদাশত করতে চেষ্টা করে।
এর পরেও যদি দাম্পত্য জীবন সংরক্ষন করতে ব্যার্থ হয় তবে সে সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন “তোমরা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কোন বিরোধ মনোমালিন্য হয়েছে বলে ভয় কর তাহলে তোমরা স্বামীর পরিবারের থেকে একজন বিচারক এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন বিচারক পাঠাও। তারা দু’জন যদি বাস্তবিকই অবস্থার সংশোধন করতে চায় তাহলে আল্লাহ তাদের সেজন্য তওফীক দান করবেন এবং তার সংশোধন করে স্বমী-স্ত্রী উভয়ের মধ্যে মিল মিশ করার চেষ্টা করবেন। আর যদি মিলমিশ অসম্ভব বলে মনে করেন তবে তাদের মধ্যেবিচ্ছেদের ব্যাবস্থা করবেন।”
মুসলিম পারিবারিক আইনে বিরোধ মিমাংসার জন্য এবং স্বামী স্ত্রীর মধ্যে আপোষ করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে চেয়ারম্যান বা সালিসী পরিষদের উপর। তিনি উভয় পক্ষকে নটিশের মাধ্যমে উপস্তিত করার জন্য বলবেন। কোন পক্ষ যদি হাজির না হয় তবে তাকে হাজির করার ক্ষমতা তার নেই। স্বামী-স্ত্রী উভয় পক্ষের মধ্যে আপোষ মিমাংসা করার চেষ্টা করা ছাড়া চেয়ারম্যানের আর কোন দ্বায়িত্ব নেই। তালাক কার্যকর অথবা অকার্যকর কোনটাই করার এখতিয়ার চেয়ারম্যানের নেই।

স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় দ্বিতীয় বিয়ে করতে চাইলে করণীয়

কোন ব্যক্তির যদি স্ত্রী বর্তমান থাকাকালে আর একটি বিয়ে করার প্রয়োজন হয় তাহলে তাকে তার বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগনের মধ্যে সর্বশেষ স্ত্রী যে এলাকার সেখানকার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট আর একটি বিয়ে করার অনুমতি চেয়ে আবেদন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে তাকে প্রস্তাবিত বিয়ের কারণ এবং এই বিয়েতে বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগনের সম্মতি রয়েছে কিনা তা উল্লেখ করতে হবে।
 
১৯৬১ সালের মুসলিম আইন অধ্যাদেশ মোতাবেক কোন ব্যক্তিই বর্তমান বিয়ে বহাল থাকা অবস্থায় সালিসী পরিষদের লিখিত পূর্বানুমতি ছাড়া আরেকটি বিয়ের চুক্তি করতে পারেনা। সালিসী পরিষদ যে সকল বিষয় বিবেচনা করে বর্তমান বিবাহ বহাল থাকা অবস্থায় অন্য বিবাহের অনুমতি দিতে পারেন।
 
*)বর্তমান স্ত্রীর বন্ধ্যাত্ব, *)শারীরিক মারাত্মক দূর্বলতা, *)দাম্পত্য জীবন সম্পর্কিত শারীরিক অযোগ্যতা, *)মানসিকভাবে অসুস্থতা বা উন্মত্ততা *)দাম্পত্য অধিকার পুনর্বহালের জন্য আদালত কর্তৃক প্রদত্ত কোন ডিক্রীর ইচ্ছাকৃত বর্জন।

যে ব্যক্তি সালিসী পরিষদের অনুমতি ছাড়া আরেকটি বিবাহ করেন তার জন্য ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের ৬(৫) ধারা অনুযায়ী সাজা হলো:
(ক) বর্তমান স্ত্রী বা স্ত্রীগনের প্রাপ্য তাত্‍ক্ষনিক ও বিলম্বিত দেনমোহরের টাকা তত্‍ক্ষনাত্‍ পরিশোধ করতে হবে। মোহরানার টাকা ঐরুপে পরিশোধ করা না হলে তা বকেয়া ভূমি রাজস্বরুপে আদায়যোগ্য হবে।
(খ) অভিযোগে দোষী প্রমানিত হলে ১ বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১০,০০০/=(দশ হাজার) টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়দন্ড হতে পারে।

ওয়ারিশ সনদ কেন দরকার এবং কিভাবে তুলতে হয়

ওয়ারিশ সনদ কেন দরকার?

সনদটি উত্তরাধিকারগণকে তাদের নামে কোন সম্পত্তি হস্তান্তরিত আছে কিনা, বা উত্তরাধিকার যোগ্য কতটুকু সম্পদ আছে তা সত্যায়ন করে থাকে। উত্তরাধিকারী/ সুবিধাভোগীর আবেদনের প্রেক্ষিতে উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সনদটি ইস্যু করা হয়। ওয়ারিশ সনদ কার্যকরী, কিন্তু সব সময় এর বলে মৃতের সম্পদে উত্তরাধিকার নাও পাওয়া যেতে পারে। সাথে প্রয়োজন, একটি মৃত্যু সনদ এবং অনাপত্তি সনদ। যে আদালতের এখতিয়ারে সম্পত্তি রয়েছে, সেখানে আবেদন জারি করতে হয়। ওয়ারিশ সনদের নিয়ম-কানুন উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫ (The Succession Act, 1925) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

কিভাবে পাবেন?

ওয়ারিশ সনদ সাধারণত: স্থানীয় পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রদত্ত প্রত্যয়ন পত্র । যা একজন মৃত ব্যক্তির আইনি উত্তরাধিকার/ওয়ারিশদের স্বীকৃতি দেয় ।
আবার ওয়ারিশ সনদ দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমেও পাওয়া যায়। সাধারণত অর্থ ও অস্থাবর সম্পত্তির দেনা – পাওনা ইত্যাদির সুষ্ঠ হিসাব পাওয়া জন্য ও যাতে করে ভবিষ্যতে কোন ধরনের ঝামেলা না হয় সে জন্য দেওয়ানী আদালতের মাধ্যমে ওয়ারিশ সনদ নেওয়া হয়।

এ সনদের জন্য কি কি লাগবে?

# ওয়ারিশগণের ১ কপি ছবি (সত্যায়িত) # মৃত্যু সনদ ১ কপি (সত্যায়িত) # মেয়র.সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান এর তদন্ত প্রতিবেদন # সংশ্লিষ্ট বাজার চৌধুরী/হেডম্যান এর তদন্ত প্রতিবেদন।

আবেদন ফরমেট

ওয়ারিশান সনদ পাওয়ার আবেদন পত্র

বরাবর,
চেয়ারম্যান সাহেব
আটাবহ ইউনিয়ন পরিষদ
কালিয়াকৈর, গাজীপুর।
বিষয়ঃ   ওয়ারিশান সনদ পত্র পাওয়ার জন্য আবেদন।

জনাব,
বিনীত নিবেদন এই যে আমার  পিতাঃ মৃত: সৈয়দ গোলাম মাওলা রেজভী  , পিতাঃ মৃতঃ সৈয়দ হাসান আলী রেজভী সাংঃ রসুলপুর, উপজেলাঃ কালিয়াকৈর, জেলাঃ গাজীপুর।
সে মৃত্যু কালে নিম্ন লিখিত  ওয়ারিশাগনকে রাখিয়া যায়।
ক্রমিক নং ওয়ারিশানদের নাম সম্পর্ক বয়স মন্তব্য
 ১ সৈয়দা ফিরোজা ইয়াসমিন  রেজভী মেয়ে ৫৭
   সৈয়দ শামসুল আরেফিন রেজভী ছেলে ৫৫
সৈয়দা আফরোজা রহমান মেয়ে ৫২
সৈয়দ হাসিব আল হাসান রেজভী ছেলে ৪৭
অতএব,  মহোদয়ের  সমীপে বিনীত প্রার্থনা এই, উল্লেখিত  বিষয়ে আমাকে একটি ওয়ারিশ  সনদ প্রদান করিতে আপনার সু- আজ্ঞা হয়।

বিনীত নিবেদক
নামঃ
তারিখঃ                                                        পিতাঃ
গ্রামঃ রসুলপুর
স্থানীয়ভাবে তদন্ত করে উপরোক্ত বনর্না সত্য  পাওয়া গেল।
সাটির্ফিকেট প্রদান করার জন্য সুপারিশ করা হল।
………… ………… …………
০১ নং ওয়ার্ডের সদস্য

পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার পদ্ধতি

বিদেশে চাকুরির ক্ষেত্রে বা বিদেশ যাওয়ার জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়। পুলিশ ক্লিয়রেন্স সার্টিফিকেট এর অর্থ হচ্ছে, যাকে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স দেয়া হচ্ছে তিনি কোন অপরাধী নন এবং তার বিরুদ্ধে থানায় কোন অভিযোগও নেই।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নেবার পদ্ধতি:
একটি সাদা কাগজে বাংলা বা ইংরেজীতে পুলিশ কমিশনার মহোদয় বরাবর আবেদন করতে হয়, সাথে ১ম শ্রেণীর সরকারী গেজেটেড কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত পাসপোটের ফটোকপি দিতে হয়। পাসপোটের যে সকল পৃষ্ঠায় প্রার্থী সংক্রান্ত তথ্য রয়েছে যে সকল পৃষ্ঠা এবং যদি নবায়ন করা হয়ে থাকে তবে নাবায়নের পৃষ্ঠাসহ পাসপোর্টের ফটোকপি দাখিল করতে হয়। কর্তৃপক্ষ চাইলে মূল পাসপোর্টও প্রদর্শন করতে হয়। মেয়াদ উত্তীর্ণ পাসপোর্ট গৃহীত হয় না।
ঠিকানা সংক্রান্ত নিয়মাবলী:
১. পাসপোর্টে উল্লেখিত স্থায়ী কিংবা অস্থায়ী ঠিকানার যে কোন একটি অবশ্যই ঢাকা মহানগর এলাকার অভ্যন্তরে হতে হবে এবং অবশ্যই ঐ ঠিকানায় বসবাস করতে হবে। যদি পাসপোর্টে উল্লেখিত স্থায়ী/বর্তমান ঠিকানা অথবা “থানা এলাকার” পরিবর্তন হয় তবে নিকটস্থ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ঠিকানা সংশোধন করে পাসপোর্টের সত্যায়িত ফটোকপি দাখিল করতে হবে। প্রার্থীর দাখিলকৃত জাতীয় পরিচয় পত্র/জন্ম নিবন্ধন সনদ/স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এর সনদপত্রে উল্লেখিত ঠিকানার সাথে প্রার্থীর বর্তমান বসবাসের ঠিকানার মিল থাকা জরুরি।
২. যারা বিদেশে অবস্থান করছেন তাদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য যে দেশে অবস্থান করছেন সে দেশে বাংলাদেশ দূতাবাস/হাইকমিশন অফিসের সংশিষ্ট কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত পাসপোর্টের ফটোকপিসহ তার পক্ষে আত্মীয়/অনুমোদিত ব্যক্তি আবেদন পত্র দাখিল করতে পারেন।
৩. পাসপোর্টে উল্লেখিত ঠিকানা যদি ঢাকা মহানগরীর বাইরে হয় তবে ঠিকানাটি যে জেলার অন্তরগত সেই জেলার বিশেষ পুলিশ সুপার বরাবর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদনপত্র দাখিল করতে হয়।
আবেদনের সাথে যা যা প্রয়োজন
১. বাংলাদেশ ব্যাংক/সোনালী ব্যাংকের যে কোন শাখায় কোড নম্বর- (১-২২০১-০০০১-২৬৮১) এর অনুকূলে ৫০০ (পাঁচশত) টাকা মূল্যমানের ট্রেজারী চালানের মূলকপি। ব্যাংক চালানের কোড নম্বর এর ঘরে কোন প্রকার ঘষামাজা / ফ্লুইড ব্যবহার করা যাবে না এবং সঠিকভাবে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষর ও সিল দেয়া হল কিনা সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
২. মেশিন রিডেবল পাসপোর্টের (এম.আর.পি) ক্ষেত্রে যদি পাসপোর্টে ঠিকানা উল্লেখ না থাকে তবে ঠিকানার প্রমাণ স্বরুপ জাতীয় পরিচয় পত্র/ জন্ম নিবন্ধন সনদ/ স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রদত্ত সনদপত্রের ফটোকপি ১ম শ্রেণীর সরকারী গেজেটেড কর্মকর্তা দ্বারা সত্যায়িত করে দাখিল করতে হয়।
৩. শুধুমাত্র “স্পেন” সংক্রান্ত পুলিশ ক্লিয়ারেন্স পাওয়ার জন্য প্রার্থীকে তার আবেদনসহ উপরে উল্লেখিত কাগজপত্রের সাথে ০৩ (তিন) কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি সত্যায়িত করে “সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়” বরাবর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বহিরাগমন শাখা ০৩ এ দাখিল করতে হয়।
পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট নেবেন যেভাবে
আবেদনপত্র জমা দেয়ার পর অফিস থেকে প্রাথমিকভাবে সিরিয়াল নম্বরসহ একটি টোকেন দেয়া হয়। টোকেনে একটি তারিখ উল্লেখ করা হয়। উল্লেখিত তারিখে সংশ্লিষ্ট থানায় টোকেনটি জমা দিতে হয়। এরপর থানার তরফ থেকে একটি তদন্তর্কায সম্পন্ন করা হয়। এই তদন্তের সাত (৭) কর্মদিবসের মধ্যে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেয়া হয়।
বাংলাদেশে বসবাসরত/কর্মরত বিদেশী নাগরিক/বিদেশী পাসপোর্টধারী ব্যক্তিগণ উপরোক্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নিজে অথবা অনুমোদিত ব্যক্তি দ্বারা আবেদনপত্র দাখিল করে পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন
ঢাকার বাসিন্দাদের পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট প্রয়োজন হলে রমনায় অবস্থিত ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের সদরদপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে। সকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট ইংরেজী ভাষায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হতে সত্যায়িত করে দেয়া হয়।
যোগাযোগ:
‘পুলিশ ক্লিয়ারেন্স ওয়ান ষ্টপ সার্ভিস’, রুম-১০৯, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়াটার্স, ৩৬, শহীদ ক্যাপ্টেন মনসুর আলী সরণী, রমনা, ঢাকা। হেল্পলাইনঃ- ০১১৯১০০৬৬৪৪, ০২-৭১২৪০০০, ৯৯৯-২৬৩৫

জাতীয় পরিচয়পত্র হারালে বা সংশোধনে কী করবেন

দেশের নাগরিক হিসেবে পরিচয় এবং রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন সুবিধা পেতে গেলে জাতীয় পরিচয়পত্র থাকা আবশ্যক। আবার যাঁরা নতুন পরিচয়পত্র করতে চান, তাঁদের অনেকেই এ বিষয় সম্পর্কে অবগত নন। অনেকে আবার জানেন না, কীভাবে পরিচয়পত্র করতে হবে, এ জন্য কোথায় যেতে হবে , কী কী প্রয়োজন ইত্যাদি। আবার পরিচয়পত্র ছিল, হারিয়ে গেছে বা পরিচয়পত্রে ভুল তথ্য রয়েছে সংশোধন করা প্রয়োজন—এমন অনেকেই আছেন বুঝতে পারছেন না, তাঁরা কীভাবে নতুন পরিচয়পত্র পাবেন বা ভুল তথ্য ঠিক করবেন। তাঁদের জন্যই আমাদের এই বিশেষ আয়োজন।
নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে হলে
বাংলাদেশে কারো বয়স ১৮ বছর হলেই কেবল তিনি জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে ভোটার তালিকায় নাম ওঠাতে পারেন। দেশের প্রতিটি উপজেলা নির্বাচন কমিশন অফিসে গিয়ে এ-সংক্রান্ত আবেদন জমা দিতে হবে। সেখানে পরিচয়পত্র বিতরণের ব্যবস্থা করা হয়। এ ছাড়া রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সপ্তম তলায় আবেদন করে তৈরি করে নিতে পারেন নিজের পরিচয়পত্র।
এবার চলুন, জেনে নেওয়া যাক, আপনার নতুন পরিচয়পত্র করতে হলে যা যা লাগবে :
১. এসএসসি বা সমমানের সনদ, ২. নাগরিকত্ব সনদ, ৩. জন্মনিবন্ধন সনদ, ৪. চাকরির প্রমাণপত্র, ৫. পাসপোর্ট, ৬. নিকাহনামা, ৭. পিতা, স্বামী কিংবা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। আবেদনপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত এসব নথি অবশ্যই সত্যায়িত হতে হবে। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ করা নথির মধ্যে যাঁর যা ঘটেনি, তা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। যেমন : যাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসির কম, তাঁকে এসএসসি বা সমমানের সনদের ফটোকপি জমা দিতে হবে না। আবার কেউ যদি চাকরি না করেন, তাঁকে চাকরির প্রমাণপত্র দিতে হবে না। যাঁদের পাসপোর্ট নেই, তাঁদের ক্ষেত্রে তা দেওয়ার দরকার নেই।
জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে
জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে আপনার নিকটবর্তী থানায় ভোটার নম্বর বা আইডি নম্বর উল্লেখ করে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে হবে। এর পর জিডির মূল কপিসহ প্রকল্প কার্যালয় থেকে নেওয়া আবেদনপত্র নির্দিষ্ট কাউন্টারে জমা দিয়ে প্রাপ্তি স্বীকারপত্র নিতে হবে। প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে ডুপ্লিকেট পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। কিন্তু আপনি যদি দেখেন, নতুন করে পাওয়া পরিচয়পত্রে ভুল আছে, তখন কী করবেন? চলুন জেনে নিই, পরিচয়পত্রের ভুল সংশোধনে কী করতে হয়।
ভুল সংশোধনে করণীয়
এক কপি ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন এবং জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানে সহায়তা প্রদান প্রকল্পের পরিচালকের কাছে আবেদনপত্র লিখতে হবে। আর এই আবেদনপত্র পাওয়া যায় আগারগাঁওয়ের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ভবনের নিচতলায়। সেখানে ফরম পূরণ করে জমা দেওয়ার পর একটি নির্দিষ্ট সময় দেওয়া হবে। ওই তারিখে রসিদসহ গিয়ে আপনাকে নিয়ে আসতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র।
যদি নাম পরিবর্তন করতে চান
জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজের নাম বদল করতে হলে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি। শিক্ষাগত যোগ্যতা এর নিচে হলে দেওয়ার দরকার নেই। বিবাহিত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে স্ত্রী বা স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি, ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে সম্পাদিত এফিডেভিট ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত নাম পরিবর্তন-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপনের কপি নাম পরিবর্তনের জন্য প্রার্থীকে শুনানির দিন প্রকল্পের কার্যালয়ে কাগজপত্রের মূল কপিসহ হাজির হতে হবে।
স্বামীর নাম সংযোজন বা বাদ দেওয়া
বিয়ের পর কেউ জাতীয় পরিচয়পত্রে স্বামীর নাম যুক্ত করতে চাইলে তাঁকে কাবিননামা ও স্বামীর জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। আর বিবাহবিচ্ছেদের কারণে স্বামীর নাম বাদ দিতে চাইলে আবেদনকারীকে তালাকনামার সত্যায়িত কপি জমা দিতে হবে।
পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তন
পিতা বা মাতার নাম পরিবর্তন করতে হলে আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে এসএসসি বা এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার সনদ অথবা রেজিস্ট্রেশন কার্ড। পিতা বা মাতার পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি পিতা বা মাতা বা উভয়ে মৃত হলে দিতে হবে ভাই বা বোনের পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপি। পিতা-মাতার নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিতে পারেন।
জন্মতারিখ সংশোধন
যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের, তাঁদের আবেদনপত্রের সঙ্গে এসএসসি বা সমমানের সনদের সত্যায়িত ফটোকপি জমা দিতে হবে। বয়সের পার্থক্য অস্বাভাবিক না হলে প্রাপ্তি স্বীকারপত্রে উল্লেখ করা তারিখে সংশোধিত পরিচয়পত্র বিতরণ করা হয়। অস্বাভাবিক পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সনদের মূল কপি প্রদর্শন কিংবা ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নিতে পারে। যাঁদের শিক্ষাগত যোগ্যতা এসএসসি বা সমমানের কম, তাঁদের জন্মতারিখ সংশোধনের জন্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার আগের তারিখে পাওয়া সার্ভিস বুক বা এমপিওর কপি ড্রাইভিং লাইসেন্স, জন্মসনদ, নিকাহনামা, পাসপোর্টের কপি প্রভৃতি। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা প্রকল্প পরিচালক আবেদনকারীর সাক্ষাৎকার নিয়ে থাকেন। এ ছাড়া দরকার হলে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে সরেজমিনে তদন্ত করা হয়।

যেসব কারনে জামিন পাওয়া যাবে

ধারা ৪৯৬ অনুযায়ি। নিচের ক্ষেত্র গুলোতে জামিন মঞ্জুর করা যাবে।
জামিনের অযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি ব্যতীত অপর কোন ব্যক্তি কোন থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার কর্তৃক বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার হইলে বা আটক থাকিলে, বা আদালতে হাজির হইলে বা তাহাকে হাজির করা হইলে, সে যদি উক্ত অফিসারের হেফাজতে থাকিবার সময় বা উক্ত আদালতের কার্যক্রমের কোন পর্যায়ে জামানত দিতে প্রস্তুত থাকে তাহা হইলে তাহাকে জামিনে মুক্তি দিতে হইবেঃ তবে শর্ত থাকে যে, উক্ত অফিসার বা আদালত উপযুক্ত মনে করিলে তাহার নিকট হইতে জামানত গ্রহণের পরিবর্তে সে অতঃপর বর্ণিতভাবে হাজির হইবার জন্য জামিনদার ব্যতীত মুচলেকা সম্পাদন করিলে তাহাকে মুক্তি দিতে পারিবেন।
তবে আরও শর্ত থাকে যে, এই ধারার কোন বিধান ১০৭ ধারার (৪) উপধারা বা ১১৭ ধারার (৩) উপধারার কোন বিধানকে প্রভাবিত করিবে বলিয়া গণ্য করা হইবে না। শুরুতে ধারা ৪৯৭
যখন জামিনের অযোগ্য অপরাধের ক্ষেত্রে জামিন মঞ্জুর করা যাইবে :
(১) জামিনের অযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার কর্তৃক বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার হইলে বা আটক থাকিলে অথবা আদালতে হাজির হইলে বা তাহাকে হাজির করা হইলে তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া যাইেত পারে; কিন্তু সে মৃত্যুদন্ড বা যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডনীয় কোন অপরাধে দোষী বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকিলে উক্তরূপে দেওয়া যাইবে নাঃ
তবে শর্ত থাকে যে, আদালত এইরূপ অপরাধে অভিযুক্ত কোন ব্যক্তি ষোল বৎসরের কম বয়স্ক বা স্ত্রীলোক বা পীড়িত বা অক্ষম হইলে তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারিবেন।
(২) ক্ষেত্রমতে তদন্ত, ইনকোয়ারী বা বিচারের কোন পর্যায়ে উক্ত অফিসার বা আদলতের নিকট যদি প্রতিয়মান হয় যে, আসামী জামিনের অযোগ্য কোন অপরাধ করিয়াছে বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ নাই, কিন্তু তাহার অপরাধ-সম্পর্কে আরও ইনকোয়ারির পর্যাপ্ত হেতু রহিয়াছে, তাহা হইলে এইরূপ ইনকোয়ারী সাপেক্ষে আসামীকে জামিনে, অথবা উক্ত অফিসার বা আদলত বা আদালতের ইচ্ছানুযাসারে সে অতঃপর বর্ণিতভাবে হাজির হইবার জন্য জামিনদার ব্যতীত মুচলেকা সম্পাদন করিলে তাহাকে মুক্তি দিত পারিবেন।
(৩) কোন অফিসার বা আদালত (১) উপধারা বা (২) উপধারা অনুসারে কোন ব্যক্তিকে মুক্তি দিলে তাহার ঐরূপ করিবার কারণ লিপিবদ্ধ করিবেন। (৪) জামিনের অযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার সমাপ্ত হইবার পর এবং রায় দানের পূর্বে কোন সময় আদালত যদি মনে করেন যে, আসামী উক্ত অপরাধে দোষী নহে বলিয়া বিশ্বাস করিবার যুক্তিসঙ্গত কারণ রহিয়াছে, তাহা হইলে আসামী হাজতে থাকিলে রায় শ্রবণের উদ্দেশ্যে হাজির হইবার জন্য জামিনদার ব্যতীত মুচলেকা সম্পাদনের পর তাহাকে মুক্তি দিবেন।
(৫) হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা আদালত এবং নিজে মুক্তি দিয়া থাকিলে অন্য কোন আদালত এই ধারা অনুসারে মুক্তিপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করাইতে ও তাহাকে হাজতে প্রেরণ করিতে পারিবেন। শুরুতে ধারা ৪৯৮ জামিন মঞ্জুর ও জামিনের অর্থের পরিমাণ হ্রাসের ক্ষমতা: এই অধ্যায়ের অধীন সম্পাদিত প্রত্যেক বণ্ডের অর্থের পরিমাণ মকদ্দমার যথাযথ পরিস্থিতি বিবেচনা করিয়া নির্ধারণ করিতে হইবে এবং উহা অত্যধিক হইবে না এবং দন্ডের পর আপীল থাকুক বা না থাকুক, হাইকোর্ট বিভাগ বা দায়রা আদালত যেকোন ক্ষেত্রে যেকোন ব্যক্তিকে জামিন মঞ্জুর করিবার বা পুলিশ অফিসার বা ম্যাজিস্ট্রেট কর্তৃক দাবিকৃত জামানত হ্রাস করিবার নির্দেশ দিতে পারেন।
ধারা ৪৯৯, আসামী ও জামিনদারের বন্ড:
(১) কোন ব্যক্তিকে জামিনে বা তাহার নিজের মুচলেকায় মুক্তি দেওয়ার পূর্বে উক্ত ব্যক্তি পুলিশ অফিসার বা আদালত যেইরূপ পর্যাপ্ত মনে করেন সেইরূপ পরিমাণ অর্থের জন্য একটি বন্ড সম্পাদন করিবে এবং যখন তাহাকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয় তখন এক বা একাধিক পর্যাপ্ত জামিনদার এই শর্তে বন্ড সম্পাদন করিবে যে, উক্ত ব্যক্তি বন্ডে উল্লেখিত সময়ে ও স্থানে হাজির হইবে এবং পুলিশ অফিসার বা আদালত ভিন্নরূপ নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উক্তরূপে হাজির হইতে থাকিবে।
(২) মকদ্দমার প্রয়োজন হইলে জামিনে মুক্ত ব্যক্তির জন্য আরও শর্ত থাকিবে যে, অভিযোগের জবাবদানের জন্য আহ্বান করা হইলে হাইকোর্ট বিভাগ, দায়রা আদালত বা অন্য কোন আদালতে হাজির হইতে হইবে।

ভূমি বিষয়ক তথ্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু সংজ্ঞা ও উত্তর

০১। খতিয়ান কী ? মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরন সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্তুত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে।
০২। সি,এস রেকর্ড কী ? সি,এস হল ক্যাডাস্টাল সার্ভে। আমাদের দেশে জেলা ভিত্তিক প্রথম যে নক্সা ও ভূমি রেকর্ড প্রস্তুত করা হয় তাকে সি,এস রেকর্ড বলা হয়।
০৩। এস,এ খতিয়ান কী ? সরকার কর্তৃক ১৯৫০ সনে জমিদারি অধিগ্রহন ও প্রজাস্বত্ব আইন জারি করার পর যে খতিয়ান প্রস্তুত করা হয় তাকে এস,এ খতিয়ান বলা হয়।
০৪। নাম জারী কী ? উত্তরাধিকার বা ক্রয় সূত্রে বা অন্যকোন প্রক্রিয়ায় কোন জমি থেকে নতুন মালিক হলে তার নাম খতিয়ান ভূক্ত করার প্রক্রিয়া কে নামজারী বলে।
০৫। জমা খারিজ কী ? জমা খারিজ অর্থ যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করা। প্রজার কোন জোতের কোন জমি হস্তান্তর বা বন্টনের কারনে মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমি নিয়ে নুতন জোত বা খতিয়ান খোলাকে জমা খারিজ বলা হয়।
০৬। পর্চা কী ? ভূমি জরিপ কালে প্রস্তুতকৃত খসরা খতিয়ান যে অনুলিপি তসদিক বা সত্যায়নের পূর্বে ভূমি মালিকের নিকট বিলি করা হয় তাকে মাঠ পর্চা বলে। রাজস্ব অফিসার কর্তৃক পর্চা সত্যায়িত বা তসদিক হওয়ার পর আপত্তি এবং আপিল শোনানির শেষে খতিয়ান চুরান্ত ভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর ইহার অনুলিপিকে পর্চা বলা হয়।
০৭। তফসিল কী ? তফসিল অর্থ জমির পরিচিতিমূলক বিস্তারিত বিবরন। কোন জমির পরিচয় প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট মৌজার নাম, খতিয়ান নং, দাগ নং, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমান ইত্যাদি তথ্যসমৃদ্ধ বিবরন কে তফসিল বলে।
০৮। মৌজা কী ? ক্যাডষ্টাল জরিপের সময় প্রতিথানা এলাকাকে অনোকগুলো এককে বিভক্ত করে প্রত্যেকটি একক এর ক্রমিক নং দিয়ে চিহ্নিত করে জরিপ করা হয়েছে। থানা এলাকার এরুপ প্রত্যেক টি একককে মৌজা বলে।এক বা একাধিক গ্রাম বা পাড়া নিয়ে একটি মৌজা ঘঠিত হয়।
০৯। খাজনা কী ? ভূমি ব্যবহারের জন্য প্রজার নিকট থেকে সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে ভুমিকর আদায় করে তাকে ভুমির খাজনা বলা হয়।
১০। ওয়াকফ কী ? ইসলামি বিধান মোতাবেক মুসলিম ভূমি মালিক কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজকল্যানমুলক প্রতিষ্ঠানের ব্যায়ভার বহন করার উদ্দেশ্যে কোন সম্পত্তি দান করাকে ওয়াকফ বলে।
১১। মোতওয়াল্লী কী ? ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান যিনি করেন তাকে মোতওয়াল্লী বলে। মোতওয়াল্লী ওয়াকফ প্রশাষকের অনুমতি ব্যতিত ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারেন না।
১২। ওয়রিশ কী ? ওয়ারিশ অর্থ ধর্মীয় বিধানের আওতায় উত্তরাধিকারী । কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যুবরন করলে আইনের বিধান অনুযায়ী তার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্নীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গকে ওয়ারিশ বলা হয়।
১৩। ফারায়েজ কী ? ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে।
১৪। খাসজমি কী ? ভূমি মন্ত্রনালয়ের আওতাধিন যে জমি সরকারের পক্ষে কালেক্টর তত্ত্বাবধান করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে।
১৫। কবুলিয়ত কী ? সরকার কর্তৃক কৃষক কে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহন করে খাজনা প্রদানের যে অংঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।
১৬। দাগ নং কী ? মৌজায় প্রত্যেক ভূমি মালিকের জমি আলাদাভাবে বা জমির শ্রেনী ভিত্তিক প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদাভাবে চিহ্নিত করার লক্ষ্যে সিমানা খুটি বা আইল দিয়ে স্বরজমিনে
আলাদাভাবে প্রদর্শন করা হয়। মৌজা নক্সায় প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে ক্রমিক নম্বর দিয়ে জমি চিহ্নিত বা সনাক্তকরার লক্ষ্যে প্রদত্ত্ব নাম্বার কে দাগ নাম্বার বলে।
১৭। ছুট দাগ কী ? ভূমি জরিপের প্রাথমিক পর্যায়ে নক্সা প্রস্তুত বা সংশোধনের সময় নক্সার প্রত্যেকটি ভূ-খন্ডের ক্রমিক নাম্বার দেওয়ার সময় যে ক্রমিক নাম্বার ভূল ক্রমে বাদ পরে যায় অথবা প্রাথমিক পর্যায়ের পরে দুটি ভূমি খন্ড একত্রিত হওয়ার কারনে যে ক্রমিক নাম্বার বাদ দিতে হয় তাকে ছুটদাগ বলা হয়।
১৮। চান্দিনা ভিটি কী ? হাটবাজারের স্থায়ী বা অস্থায়ী দোকান অংশের অকৃষি প্রজা স্বত্ত্য এলাকাকে চান্দিনা ভিটি বলা হয়।
১৯। অগ্র ক্রয়াধিকার কী ? অগ্র ক্রয়াধিকার অর্থ সম্পত্ত্বি ক্রয় করার ক্ষেত্রে আইনানুগভাবে অন্যান্য ক্রেতার তুলনায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্য তার বিধান । কোন কৃষি জমির মালিকবা অংশিদার কোন আগন্তুকের নিকট তার অংশ বা জমি বিক্রির মাধ্যমে হস্তান্তর করলে অন্য অংশিদার কর্তৃক দলিলে বর্নিত মূল্য সহ অতিরিক্ত১০% অর্থ বিক্রি বা অবহিত হওয়ার ৪ মাসের মধ্যে আদালতে জমা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে জমি ক্রয় করার আইনানুগ অধিকারকে অগ্রক্রয়াধিকার বলা হয়।
২০। আমিন কী ? ভূমি জরিপের মধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্তুত ও ভূমি জরিপ কাজে নিজুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলা হত।
২১। সিকস্তি কী ? নদী ভাংঙ্গনে জমি পানিতে বিলিন হয়ে যাওয়াকে সিকস্তি বলা হয় । সিকস্তি জমি ৩০ বছরের মধ্যে স্বস্থানে পয়স্তি হলে সিকস্তি হওয়ার প্রাককালে যিনি ভূমি মালিক ছিলেন, তিনি বা তাহার উত্তরাধিকারগন উক্ত জমির মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য হবেন।
২২। পয়স্তি কী ? নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়স্তি বলা হয়।

দেওয়ানী মামলার ধাপ বা পর্যায় সমূহ

আদালত সম্পর্কে বিচার প্রার্থীদের অনভিজ্ঞতা এবং ভয় ভীতি পরোক্ষভাবে আদালতের দাড়গোড়ায় তাদের ভোগান্তি বৃদ্ধি করে। মামলা সাধারণত ফৌজদারী বা দেওয়ানী এই দুই প্রকারের হয়। জমি জমা বা সম্পদ এবং পদ সংক্রান্ত মামলাকে দেওয়ানী মামলা বলা হয়। দেওয়ানী মামলা বিচারে কয়েকটি ধাপ আছে এবং প্রতিটি ধাপের জন্য আইনের কিছু নির্দিষ্ট বিধান রয়েছে। দেওয়ানী মামলার পূর্ব শর্ত আরজি গঠন। বাদীর নালিশের লিখিত বিবরণকে আরজি বলা হয়।

১। মামলা দায়ের ও আরজি গ্রহণ:
দেওয়ানী মামলা শুরু হয় আরজি গ্রহণের মাধ্যমে। দেওয়ানী আদালতের সেরেস্তাদার বা তার অনুপস্থিতিতে সেরেস্তাদার হিসেবে কর্মরত কর্মচারী মামলার আর্জি গ্রহণ করে আরজির গায়ে বা তার সাথে যুক্ত অর্ডারশিটে বা স্লিপে মামলার ফাইলিং নম্বর লিখবেন। যেমন- দেওয়ানী মামলা নং – ১০০/২০১২(এর অর্থ হল ঐ আদালতের ২০১২ সালের ১০০ নম্বর দেওয়ানী মামলা)। এরপর সেরেস্তাদার অর্ডারশিটে আলাদা করে এবং সিল মোহর লাগিয়ে যিনি আর্জি উপস্থাপন করবেন তার কাছে ফেরত দিবেন। এরপর আর্জির সাথে দাখিল হতে পারে এরূপ সকল কাগজ পত্রে মামলার নম্বর উল্লেখ করতে হবে। সেরেস্তাদার আর-১২ ফাইলিং রেজিষ্টারে (যাকে সু্ট রেজিষ্টারও বলা হয়) আর্জির বিষয় বস্তু ক্রমানুসারে লিপিবদ্ধ করবেন। সাধারণত যেদিন আর্জি গ্রহণ করা হয়, সেদিনই তা নিবন্ধকৃত হয়। সেরেস্তাদার আর্জি পরীক্ষা করে আর্জির প্রথম পৃষ্ঠার বাম প্রান্তের উপরিভাগে ষ্ট্যাম্প পর্যাপ্ত হয়েছে কিনা তা লিখবেন। অপর্যাপ্ত ষ্ট্যাম্প থাকলে তাও উল্লেখ করবেন এবং বাকী ষ্ট্যাম্প আদায়ের পর ২য় বার তা উল্লেখ করে প্রত্যায়ন করবেন(সি. আর. ও, ভলিউম -১, বিধি-৫৫)। ২১ দিনের মধ্যে বাকী ষ্ট্যাম্প প্রদান করতে হয়। এইভাবে একটি দেওয়ানী মামলা দায়ের করা হয়।

২। আর্জি ফেরত বা প্রত্যাখ্যান:
আর্জি ফেরত বা প্রত্যাখান হওয়া উচিত মনে করলে সেরেস্তাদার তা বিচারকের নিকট উল্লেখ করবেন। বিচারক আইন অনুসারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্তা গ্রহণ করবেন (সি. আর. ও, ভলিউম-১, বিধি-৫৫)। কোন কারণে আর্জি সঠিকভাবে মূল্যায়িত না হলে তা সংশোধনের জন্য পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয় যার সময়সীমা ২১ দিন।

৩। সমন জারীঃ
একটি মামলা দায়েরের পরের ধাপ সমন জারী। সমন দু’ভাবে জারী করা হয়। আদালতের জারীকারকের (পদাতিকের) মাধ্যমে এবং আদালতের সেরেস্তা কর্তৃক ডাকযোগে। সমনের সাথে মামলার আর্জি, বাদীর ফিরিস্তিযুক্ত কাগজের কপি (আর্জির বিষয়ের সাথে সংগতিপূর্ণ কাগজপত্র যা আর্জির দাবীকে সমর্থন করে), ওকালতনামা, তলবানা (বিবাদীর নামীয় সমন জারীর ক্ষেত্রে সরকারের দেয়া কোর্ট ফি) দাখিল করতে হয়।
মামলার সমন বিবাদী সরাসরি গ্রহণ করলে তা সরাসরি জারী হিসেবে গণ্য হবে। আদালতের জারীকারক (পদাতিক) যখন বিবাদীর উপর সমন জারীর জন্য যাবে তখন সমন নোটিশের অপর পৃষ্ঠায় সংশ্লিষ্ট এলাকার দু’জন নিঃস্বার্থ ব্যক্তির স্বাক্ষর বা টিপ গ্রহণ করবেন।
সাধারণত সমন বিবাদীর উপর ব্যক্তিগতভাবে জারী হতে হয়। তার অনুপস্তিতে তার পক্ষে তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত প্রতিনিধির উপর সমন জারী হতে হবে। যদি তার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন প্রতিনিধি পাওয়া না যায়, তবে তার পরিবারের প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ সদস্যের উপর সমন জারী করতে হয়। এক্ষেত্রে ভৃত্য পরিবারের সদস্য হিসেবে গণ্য হবেন না। (দেওয়ানী কার্যবিধি, আদেশ-৫, বিধি-১২ ও ১৫)।

৪। জবাব দাখিলঃ
বিবাদী মামলা ১ম শুনানীর তারিখ বা তৎপূর্বে বা আদালতের অনুমোদিত সময় দুই মাসের মধ্যে লিখিত জবাব দাখিল করবেন (দেওয়ানী কার্যবিধি, আদেশ -৮, বিধি-১)। তা না হলে মামলাটি একতরফা শুনানীর জন্য নির্ধারিত হবে। তবে দেওয়ানী কার্যবিধির ৮০ ধারার নোটিশ জারী না হলে সরকার জবাব দাখিলের জন্য ৩ মাস সময় পাবে। বিবাদী যদি তার দাবীর সমর্থনে কোন দলিলাদির উপর নির্ভর করে, তবে তা ফিরিস্তি সহকারে ঐ দলিলাদি দাখিল করবেন।

৫। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বহির্ভূত শূনানীঃ
১ ম শুনানীর তারিখে যদি দেখা যায় যে, মামলার পক্ষদের মধ্যে কোন বিরোধীয় বিষয় নেই তবে তা অবিলম্বে নিষ্পত্তি করতে হবে। এক্ষেত্রে মামলা মূলতবি করার কোন সুযোগ নেই।

৬। ইস্যু গঠনঃ
মামলার ১ম শুনানীর তারিখ বা জবাব দাখিলের মধ্যে যেটি পরে, তা হতে ১৫ দিনের মধ্যে ইস্যু গঠন করতে হবে(দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-১৪, বিধি-১)। যেসব বিরোধীয় বিষয়ের উপর মামলা নিষ্পত্তি হবে সেসড বিষয় বস্ত নিয়ে ইস্যু গঠন করা হবে।
৭। উদঘাটন ও পরিদর্শনঃ
ইস্যু গঠনের ১০ দিনের মধ্যে বাদী বা বিবাদী আদালতের অনুমতি নিয়ে অপর পক্ষকে প্রশ্ন দাখিল করতে পারবেন। তবে একটি পক্ষকে একবারই লিখিত প্রশ্ন দাখিল করতে পারবেন (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-১১, বিধি-৮)

৮। ৩০ ধারার তদবিরঃ
ইস্যু গঠনের পর উভয় পক্ষের কোন তদ্বীর আছে কিনা তার জন্য এই পর্যায়টি রাখা হয়।

৯। চূড়ান্ত শুনানীর তারিখ নির্ধারণ (এস. ডি)ঃ ইস্যু গঠনের ১২০ দিনের মধ্যে মামলার চূড়ান্ত শুনানীর দিন ধার্য করতে হয় (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ-১৪, বিধি-৮)
১০। চূড়ান্ত শুনানীঃ
চূড়ান্ত শুনানীর (পি. এইচ) তারিখ হতে ১২০ দিনের মধ্যে মামলার শুনানী শেষ করতে হয় (দেওয়ানী কার্যবিধি আদেশ১৮, বিধি-১৯)। চূড়ান্ত শুনানী (পি. এইচ) ও পরবর্তী চূড়ান্ত শুনানী (এফ. পি. এইচ বা পার্ট হার্ড) পর্য্যায়ে বিচারক জবানবন্দী, জেরা, দলিলাদি গ্রহণ এবং যুক্তিতর্ক শুনবেন।

আইন বিষয়ক কতগুলি ইংরেজি শব্দের অর্থ

গৃহনির্মাণ, নিরাপত্তা, জোনিং ইত্যাদি বিষয়ক ব্যাপারে যে-সব বিধি কর্পোরেশন, সরকার বা অন্যান্য অধিকারিক সংস্থা জারী করে।
আপীল (Appeal): নিম্ন আদালতের রায়ের পুনর্বিচারের জন্য উচ্চ আদালতে আবেদন করা।
আরবিট্রেশন (Arbitration): বিবাদকারী দুই দলের অনুমোদিত নির্দলীয় কোন তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে কলহের বিচার – যার রায় বিবাদকারীরা মানতে স্বীকৃত।
এলিবাই (Alibi): অপরাধ সংঘটিত হবার সময় অভিযুক্তের অন্য কোথাও থাকার দাবী।
ইনটারলোকিউটরি (Interlocutory): অস্থায়ী, অন্তর্বতী কালের জন্য।
উইল (Will) বা ইচ্ছাপত্র: কোন ব্যক্তির মৃত্যুর পর তার ধনসম্পত্তি কি ভাবে বণ্টন করা হবে – সে বিষয়ে তাঁর ইচ্ছাপত্র।
ইনটেস্টেট (Intestate): যে ব্যক্তি উইল বা ইচ্ছাপত্র না লিখে মারা গেছে – তার স্ট্যাটাস বা অবস্থা।
একস্ট্রাডিশান (Extradition):
অভিযুক্ত ব্যক্তিকে একটি আইন-এলাকা (রাজ্য, রাষ্ট্র, ইত্যাদি) থেকে অন্য আইন-এলাকায় হস্তান্তরিত করা।
এনট্র্যাপমেন্ট (Entrapment): কাউকে অন্যায় কর্মে প্রণোদিত করা – যাতে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা যায়।
এফ.আই.আর. (F.I.R.): এটি ফাস্র্ট ইন্ফরমেশন রিপোর্ট-এর সংক্ষিপ্ত রূপ। কোন অপরাধ সংঘটিত হবার পর উত্পীড়িত ব্যক্তি বা অন্য কেউ সেই সম্পর্কে থানায় গিয়ে ভারপ্রাপ্ত অফিসারকে অভিযোগ জানালে – অফিসারের দায়িত্ব সেটিকে নথিভুক্ত করা। সেই লিখিত রিপোর্টটি হল এফ.আই.আর। এর ভিত্তিতে পুলিশের তার অনুসন্ধান শুরু করে।
এফিডেভিট (Affidevit): হলফপত্র বা শপথনামা: শপথ দেওয়ানোর ক্ষমতা আছে এমন কোনও লোকের সামনে স্বেচ্ছায় শপথপূর্বক লিখিত বিবৃতি দাখিল করা।
এমবেজেলমেণ্ট (Embezzlement) বা তহবিল তছরুপ: বিশ্বাসভরে কারোর গচ্ছিত অর্থ বা সম্পত্তি নিজের জন্য আত্মসাত করা।
ওয়ারেণ্ট (Warrant): সাধারণ ভাবে কাউকে আটক করা বা কোথাও তল্লাসী চালাবার জন্য পুলিশকে দেওয়া আদালতের হুকুম। আদালতের কাছে থেকে এই ওয়ারেণ্ট বার করার জন্য পুলিশকে আটক বা তল্লাসী চালানোর প্রয়োজনীয়তা তথ্য সহযোগে আদালতে পেশ করতে হয়।
কনটেমপ্ট অফ কোর্ট (Contempt of Court) বা আদালতের অবমাননা:
ইচ্ছাকৃত ভাবে বিচারকের আদেশ বা বিচার-বিভাগীয় হুকুম অমান্য করা।
কনভেয়্যান্স (Conveyance): কোনও জমির সত্ব এক বা একাধিক লোকের হাত থেকে অন্য হাতে যাওয়ার দলিল।
করপাস ডেলিকটি (Corpus delicti): যার ওপর অপরাধ সংঘটিত হয়েছে – তার বস্তু-অবশেষ উদ্ধার করা। যেমন, খুনের লাস বা পুড়িয়ে দেওয়া বাড়ির দগ্ধাবেশেষ, ইত্যাদি।
কুইড প্রো কো (Quid pro quo): এই ল্যাটিন শব্দটির অর্থ – ‘কিসের জন্য কি’ বা ‘কিছুর জন্য কিছু’। অর্থাত্, কিছু পেতে হলে কিছু দিতে হয়। কোন কণ্ট্র্যাক্ট পালন বাধ্যতামূলক হয় যখন দুই পক্ষের মধ্যে মূল্যবান কোন বস্তুর আদান-প্রদান ঘটে। সেইজন্য যখন কোনো কোম্পানী তাদের নতুন তৈরী করা জিনিষ বাজারে বিক্রি করার আগে পরীক্ষা করার জন্য লোকদের ব্যবহার করতে দেয়, তখন তার জন্য সাধারণত টাকা নেয় না। এই জন্য যে, সেই বস্তু কাজ না করলেও তার জন্য ব্যবহারকারীদের আইনত কিছু করার থাকে না।
কোডিসিল (Codicil): উইল বা ইচ্ছাপত্রের সংশোধন।
ক্যাপিটল ক্রাইম (Capital crime): যে অপরাধের দণ্ড হল মৃত্যু।
ক্রিমিন্যাল ইনস্যানিটি (Criminal insanity): ভালো ও মন্দের তফাত্ বোঝার অক্ষমতা; কোনও কিছু করার বা করা থেকে বিরত হবার মানসিক অক্ষমতা।
ক্লাশ একশন (Class action): যে মামলা এক বা একাধিক লোক একটি সমগ্র দলের হয়ে আদালতে আনে।
জয়েণ্ট এণ্ড সেভারেল লায়াবিলিটি (Joint and several liability): আইনের একটি ভাষা, যার অর্থ দুর্ঘটনার জন্য কোন দল দায়ী হলে, সেই দলের প্রত্যেকটি ব্যক্তি আলাদা ভাবে পুরো ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য থাকবে – যদি অন্য কেউ ক্ষতিপূরণ দিতে অসমর্থ হয়।
জয়েন্ট টেনানসি(Joint tenancy): যুগ্মভাবে সম্পত্তির মালিকানা (একে অনেক সময়ে ‘সার্ভাইভারশিপ’ বলা হয়)। এক্ষেত্রে একজন মালিকের মৃত্যু হলে, অন্যজন সম্পাত্তির পুরো মালিকানা পায়।
জাজমেণ্ট (Judgement) বা রায়:
মামলায় দুই পক্ষের বক্তব্য ও সাক্ষ্য প্রমাণ শোনার পর বিচারক তাঁর যে সিদ্ধান্ত সরকারি ভাবে প্রকাশ করেন।
জুভেনাইল ডেলিনকোয়েন্সি (Juvenile delinquency): বালক-বালিকাদের করা অপরাধ।
ডমিসাইল (Domicile) : স্থায়ী বাসস্থান।
ডিফামেশন (Defamation): মানহানি।
ডিসকভারি (Discovery): মামলা শুরু হবার আগে তার সম্পর্কিত ঘটনাসমূহ ও তথ্যাদি জানার উপায়গুলি।
ডিসমিস্যাল (Dismissal): মামলার খারিজ।
নেগলিজেন্স (Negligence): সাধারণভাবে একজন বিচারবুদ্ধি-সম্পন্ন পরিণামদর্শী লোক যে সাবধনতা অবলম্বন করবে সেটা না করা।
নোটারি পাবলিক (Notary Public): সরকারী কর্মচারী যার কাজ হল লোককে শপথ করানো, স্ট্যাম্প পেপারে লিখিত কাগজে কেউ সই করার পর সেটিতে সই করে তাকে প্রামাণিক করা, ইত্যাদি।
পেটেণ্ট (Patent): উদ্ভাবকদের দেয় অধিকার

আইন বিষয়ক গুরুত্বপুর্ন কিছু শব্দের পূর্ণ রুপ

১। প্রশ্নঃ A.D.R এর অর্থ কি? উত্তরঃ Alternative Dispute Resolution.
২। প্রশ্নঃ A.D.M এর অর্থ কি? উত্তরঃ Additional District Magistrate.
৩। প্রশ্নঃ A/D কি? উত্তরঃ Acknowledgement due.
৪। প্রশ্নঃ A.G.P এর অর্থ কি? উত্তরঃ Assistant Government Pleader.
৫। প্রশ্নঃ A.P.P এর অর্থ কি? উত্তরঃ Assistant Public Prosecutor.
৬। প্রশ্নঃ C.J.M. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Chief Judicial Magistrate.
৭। প্রশ্নঃ C.M.M. অর্থ কি? উত্তরঃ Chief Metropolitan Magistrate.
৯। প্রশ্নঃ C.S.I. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Court Sub Inspector.
১০। প্রশ্নঃ C.S. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Charge Sheet.
১১। প্রশ্নঃ C.R. Case এর অর্থ কি? উত্তরঃ Complaint Resister Case.
১২। প্রশ্নঃ D.F. অর্থ কি? উত্তরঃ Date of Filing.
১৩। প্রশ্নঃ D.M. এর অর্থ কি? উত্তরঃ District Magistrate.
১৪। প্রশ্নঃ D.O. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Date of Occurrence.
১৫। প্রশ্নঃ D.W. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Defense witness.
১৬। প্রশ্নঃ F.R.T. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Final Report True.
১৭। প্রশ্নঃ F.I.R. এর অর্থ কি? উত্তরঃ First Information Report.
১৮। প্রশ্নঃ F.H. কি? উত্তরঃ Further hearing.
১৯। প্রশ্নঃ G.D.E. এর অর্থ কি? উত্তরঃ General Diary Entry.
২০। প্রশ্নঃ G.P. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Government pleader.
২১। প্রশ্নঃ G.R. Case এর অর্থ কি? উত্তরঃ General Register Case.
২২। প্রশ্নঃ G.R.O. এর অর্থ কি? উত্তরঃ General Registration Officer.
২৩। প্রশ্নঃ I.O. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Investigation officer.
২৪। প্রশ্নঃ L.L.B এর অর্থ কি? উত্তরঃ Bachelor of Laws. তবে ল্যাটিন ভাষায় এর অর্থ Legis Legum Baccalaureus
২৫। প্রশ্নঃ N.D. অর্থ কি? উত্তরঃ Next Date.
২৬। প্রশ্নঃ P.H. অর্থ কি? উত্তরঃ Peremptory hearing.
২৭। প্রশ্নঃ P.O. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Place of Occurrence.
২৮। প্রশ্নঃ P.P. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Public Prosecutor
২৯। প্রশ্নঃ P.W. কি? উত্তরঃ Prosecution witness
৩০। প্রশ্নঃ S.D. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Settling date.
৩১। প্রশ্নঃ S.W এর অর্থ কি? উত্তরঃ Search Warrant.
৩২। প্রশ্নঃ S/R কি? উত্তরঃ Service Return
৩৩। প্রশ্নঃ T.S. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Title suit.
৩৪। প্রশ্নঃ W.A. এর অর্থ কি? উত্তরঃ Warrant of Arrest.
৩৫। প্রশ্নঃ W/O. কি? উত্তরঃ Written objection
৩৬। প্রশ্নঃ W/S. কি? উত্তরঃ Written statement.
৩৭। প্রশ্নঃ W/W কি? উত্তরঃ Witness Warrant

আইন বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু শব্দের অর্থ

Concept-ধারণা
Doctrine-মতবাদ
Proportional-সমানুপাতিক
Administrative Law-প্রশাসনিক আইন
Administration- প্রশাসন, শাসন কার্য
Legitimate-বৈধ, আইন সম্মত
Noteworthy-উল্লেখযোগ্য, লক্ষণীয়
Promise-প্রতিশ্রুতি, ওয়াদা, অঙ্গীকার, শপথ
Procedure-প্রক্রিয়া, কার্যপ্রনালি, কার্য পরিচালনার ধারা
Act-আইন
Fairly-নিরপেক্ষভাবে
Implement-বাস্তবায়ন
Implementation-বাস্তবায়ন
Interfere-হস্তক্ষেপ করা
Statutory-সংবিধিবদ্ধ, আইন বলে নির্দিষ্ট
Treat-আচরণ করা
Authority-কর্তৃত্ব, বিধিসঙ্গত ক্ষমতা
Adverse-প্রতিকূল
Affect-অনুভূতি
Judicature-আদালত, বিচারাধিকার, বিচারপতির পদ
Judicial-বিচারসংক্রান্ত
Implicit-অন্তর্নিহিত
Implicate-সংশ্লিষ্ট করা
Privilege-বিশেষ অধিকার
Practice-অনুশীলন, চর্চা
Applicant-দরখাস্তকারী, আবেদনকারী
Reasonable-যৌক্তিক, যুক্তিসঙ্গত
Citizen-নাগরিক
Context-প্রসঙ্গ, প্রেক্ষাপটে
Natural Justice-ন্যায়বিচার
Appearance-উপস্থিতি
Wherein-যাহাতে
Allow-মঞ্জুরি, অনুমতি
Consult-পরামর্শ করা
Decision-সিদ্ধান্ত, ফয়সালা
Review-পর্যালোচনা, পুনর্বিবেচনা
Afford-সামর্থ
Base-ভিত্তি
Instance-উদাহরণ
Satisfy-পরিতৃপ্ত করা
Foundation-ভিত্তি
Claim-দাবি, দাবি করা
Consider-বিবেচনা করা
Grant-মঞ্জুর
Relief-উপশম, ত্রাণ

সহজ উপায়ে কিভাব ব্যারিস্টার হওয়া যায়

নেকেই ইনবক্সসহ বিভিন্নভাবে ব্যারিস্টারি কীভাবে করবেন সে বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান। তাদের কথা মাথায় রেখেই ব্যারিস্টারি বিষয়ে বিস্তারিত এই পোস্টটি করা। তাই অনুরোধ থাকবে পড়া শেষে ভালো লাগলে শেয়ার করে অন্যকেও জানার সুযোগ দিন।- এডমিন
উত্তরঃ-
ব্যারিস্টার হতে চান?
ব্যারিস্টার অ্যাট ল-র সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে বার অ্যাট ল। একজন ব্যারিস্টার হিসেবে স্বীকৃত হওয়ার জন্য ৯ মাসের একটি বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্স (বিপিটিসি) করতে হয়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের আইনজীবীদের বলা হয় অ্যাডভোকেট। আমেরিকাতে আইনজীবীকে বলা হয় অ্যাটর্নি। তেমনি করে অস্ট্রেলিয়ার আইনজীবীকে বলা হয় ব্যারিস্টার। এভাবে বিভিন্ন দেশে আইনজীবীকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। আমাদের ঔপনিবেশক দেশ যুক্তরাজ্য হবার কারণে এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সত্ত্বেও ঔপনিবেশক মন স্বাধীন না হবার কারণে বাংলাদেশে ব্যারিস্টারকে অত্যন্ত সম্মানের চোখে দেখা হয়।
যোগ্যতাঃ
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রভৃতি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনের ওপর অনার্স ও মাস্টার্স করেও কেউ সরাসরি ইংল্যান্ডে প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন না। অর্থাৎ ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় এবং তাদের অধিভুক্ত কিছু প্রতিষ্ঠান ছাড়া অন্য কোনো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কেউ যদি অনার্স পাস করে তবে তাকে বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সে ভর্তি হতে হলে আবার নতুন করে কোনো ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে এলএলবি বা এলএলএম পাস করতে হবে। তবে এ ক্ষেত্রে মাস্টার্স ডিগ্রিধারীরা একটা বিশেষ সুবিধা পান, তা হলো – তাদের অনার্সের মোট ১২টি বিষয়ের মধ্যে তিনটি বিষয় কম পড়লেই চলে।
এ কোর্সে প্রতিবছরই পাঁচ হাজারের মতো আবেদন জমা পড়ে। শিক্ষাগত যোগ্যতা, ব্যক্তিগত দক্ষতা, ভাষার দখল, সাংগঠনিক দক্ষতা এসব বিষয় বিবেচনায় এনে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন করা হয়। সম্প্রতি আইইএলটিএস স্কোরও দেখা হচ্ছে। আবেদনের ক্ষেত্রে স্কোর ৭.৫ বাধ্যতামূলক হলেও অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়।
দেশে বসেই ইংল্যান্ডের ডিগ্রিঃ
আমাদের দেশে ব্রিটিশ স্কুল অব ল, লন্ডন কলেজ অব লিগ্যাল স্টাডিজ, ভূঁইয়া একাডেমী, নিউ ক্যাসেল ল একাডেমী এই চারটি টিউশন সার্ভিস প্রোভাইডার বার অ্যাট ল পড়ালেখার বিষয়ে সহযোগিতা করে থাকে।
এইচএসসি বা সমমানের ডিগ্রিধারী যে কেউ ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় স্বীকৃত তিন-চার বছর মেয়াদি এলএলবি অনার্স কোর্সে ভর্তি হতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসি মিলে জিপিও-৫ থাকতে হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা নেই। শিক্ষার্থীরা ইংল্যান্ডের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অভিন্ন প্রশ্নপত্রে ও একই সময়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে থাকেন। পরীক্ষা নেওয়া হয় ব্রিটিশ কাউন্সিলের মাধ্যমে। ইংল্যান্ডেই এসব উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয়। এভাবে দেশে বসেই ইংল্যান্ডের ডিগ্রি পেতে পারেন। এলএলবি করার পর ইংল্যান্ডে সরাসরি বার ভোকেশনাল কোর্সে ভর্তি হওয়া যাবে।
ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন আর ইউনিভার্সিটি অব নর্দামব্রিয়া দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে ব্রিটিশ ডিগ্রি নেওয়ার সুযোগ দেয়। তবে ঘরে বসে ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয় বা স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে আইন বিষয়ে অনার্স করা গেলেও নয় মাসের বার প্রফেশনাল ট্রেনিং কোর্সের জন্য ইংল্যান্ডে যেতেই হবে।
কোথায় পড়বেন?
বার অ্যাট ল কোর্সটি ইংল্যান্ডের চারটি ইন’স-এর যেকোনো একটি থেকে করতে হয়। অর্থাৎ লিন্কনস্ ইন, গ্রেইস ইন, ইনার টেম্পল ও মিডল টেম্পল এই চারটি ইন’স এর মধ্যে যেকোনো একটি আপনাকে বেছে নিতে হবে।
সনদ ইন থেকে দেওয়া হলেও কোনো একটি ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পড়াশোনা করতে হয়। ইন’স অব কোর্ট, স্কুল অব ল, কলেজ অব ল, বিপিপি ল স্কুল, নটিংহ্যাম, নর্দামব্রিয়া, ব্রিস্টল, কার্ডিফ, ম্যানচেস্টার মেট্রোপলিটন এই ৯টি প্রতিষ্ঠানে বার অ্যাট ল করা যায়। এর যেকোনো একটিতে পড়তে পারেন। সাধারণত আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বার অ্যাট ল কোর্সে ভর্তি করা হয়।
খরচাপাতিঃ
ব্যারিস্টারি পড়া বেশ ব্যয়বহুল। প্রতিবছরই এ খরচ বাড়ছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানভেদে টিউশন ফি কিছুটা কম-বেশি হয়ে থাকে। ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি (অনার্স) ডিগ্রিটা যদি ঘরে বসে নিতে চান, তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফি ও বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানের টিউশন ফি বাবদ কমপক্ষে ১৯ থেকে ২০ লাখ টাকা লাগবে। ইংল্যান্ডে গিয়ে নিতে চাইলে শুধু টিউশন ফি বাবদ লাগবে ২৬ থেকে ৫৬ লাখ।
বার ভোকেশনাল কোর্সের বর্তমান টিউশন ফি ৯ থেকে ১৫ হাজার পাউন্ড। বাংলাদেশি টাকায় এ ফি ১০ থেকে ১৬ লাখ টাকা। বার অ্যাট ল কোর্সটির মেয়াদ ৯ মাস হলেও এটি শেষ করতে এক বছর লেগে যায়। তাই এর টিউশন ফির সঙ্গে এক বছরের থাকা-খাওয়ার খরচ হিসাব করতে হবে। এ খরচ নির্ভর করে জীবনযাত্রার ওপর। এই এক বছরে থাকা-খাওয়া বাবদ পাঁচ থেকে আট লাখ টাকা গুনতে হবে।
Bar at Law সম্পন্ন করতে সম্ভাব্য ব্যয় হতে পারে ৬৩ লাখ থেকে এক কোটি টাকার মতো।
খণ্ডকালীন কাজের সুযোগঃ
ইংল্যান্ডে যাঁরা ব্যারিস্টারি পড়তে যান, পড়াশোনার পাশাপাশি তাঁদের খণ্ডকালীন কাজের সুযোগ রয়েছে। দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রছাত্রীরা নতুন নিয়মে সপ্তাহে ১০ ঘণ্টা কাজ করতে পারেন। যদিও এ সময় পড়ার চাপে খণ্ডকালীন কাজ করা যায় না। বার অ্যাট ল করার সময় প্রচুর পড়াশোনা করতে হয়। তাই সুযোগ থাকলেও খণ্ডকালীন কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, কেউ যদি ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করে বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে চায় সেক্ষেত্রে তাকে বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করে সনদ নিতে হবে। এর আগে যদি কেউ ব্যারিস্টারি ডিগ্রি অর্জন করত, সে সরাসরি বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত হতে পারত। কিন্তু এখন সেই নিয়মের পরিবর্তন করা হয়েছে। বাংলাদেশে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স করা যায় এমন দুটি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দেওয়া হলো-

হাইকোর্টের আইনজীবী হওয়ার পদ্ধতি

সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অ্যাডভোকেট হিসাবে আইন চর্চা করার জন্য-
প্রাথমিক শর্তাবলী 1. বার কাউনসিল পরীক্ষার মাধ্যমে যে কোন বার এসোসিয়েশনে অ্যাডভোকেট (সাধারণ অ্যাডভোকেটের তালিকাভুক্তিকরণ) হিসাবে তালিকাভুক্তহতে হবে। 2. নিম্নোক্ত যে কোন একটি যোগ্যতা থাকতে হবে :-
A. বাংলাদেশের কোন নিম্ন আদালতে কমপক্ষে ২ বছর প্র্যাকটিস করতে হবে; অথবা, B. আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রী এবং অ্যাডভোকেট হিসাবে বিদেশের কোন আদালতে সরকারের অফিসিয়াল গেজেটে নির্দেশিত পন্থায় প্র্যাকটিস করেছেন; অথবা, C. যুক্তরাজ্যের বারে ব্যারিস্টার হিসাবে Call পেয়েছেন অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেLL.M এ 2nd class (50%mark) পেয়েছেন এবং সুপ্রীম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবীর চেম্বারে কমপক্ষে ২ বছর কাছ করেছেন; অথবা, D. বিচার বিভাগীয় অফিসার হিসাবে অন্ততঃ দশ বছর কাজ করেছেন। এরূপ অফিসারকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রণেরআবশ্যকতা নেই।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শর্তাবলীঃ
1. কোন অ্যাডভোকেট যিনি উপরিউক্ত শর্তাবলী পূরন করেছেন তাকে নির্দেশিত পন্থায় হাইকোর্ট বিভাগে আইন চর্চা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানাতে হবে। আবেদন পত্র বার কাউনসিলে জমা দিতে হবে এবং উক্ত আবেদনপত্রে নিম্নোক্ত সংযুক্তিথাকবেঃ A. সংশ্লিষ্ট বার এসোসিয়েশন হতে একটি সনদ এই মর্মে যে, উক্ত অ্যাডভোকেট তার বার এসোসিয়েশনের নিয়মিতসদস্য এবং আইন চর্চাকরেছেন ২ বছর , অথবা , যুক্তারাজ্যের বারেতাকে ব্যারিস্টার হিসাবে Call করেছে এই মর্মে একটি সনদ, অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে LL.M এ উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগ অর্জন করেছে; এবং B. কোর্টের একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেটের চেম্বারে কমপক্ষে দুই বছর কাজ করেছেন; এবং C. দেওয়ানী বা ফৌজদারী বা উভয় মামলা যা নিয়ে উক্ত অ্যাডভোকেট সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হয়েছে এরূপ ২৫টি মামলার তালিকা; এবং D. হাইকোর্টের অনুমোদন ফি ৫,০০০ টাকা প্রদানের রশিদ কিংবা ব্যাংক ড্রাফট; এবং E. উক্ত অ্যাডভোকেটের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি। 2. প্রত্যেক আবেদনকারীকে Bangladesh Legal Paractitioners and Bar Council Rules, 1972 (65(2)) অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণপূর্বক পাশ করতে হবে।

আইনজীবী হিসাবে তালিকা ভূক্তির নিয়ম

★তালিকাভূক্ত হওয়ার যোগ্যতাঃ
১) একজন ব্যক্তিকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলে এ্যাডভোকেট হিসাবে তালিকাভুক্ত হতে হলে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ২) বাংলাদেশের কোন অনুমদিত বিশ্ববিদ্যালয় হতে অথবা বিদেশী কোন বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন বিষয়ে ডিগ্রীধারী হতে হবে। ৩) আইন বিষয়ে ডিগ্রি সম্পন্নকারী কোন বাংলাদেশী নাগরিক বার কাউন্সিলে এ্যাডভোকেট তালিকাভূক্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহনের উদ্দেশ্যে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল আদেশের নিয়ম অনুযায়ী কোন সিনিয়রের সাথে শিক্ষানবীশ হিসাবে কাজ করার যোগ্য হবেন। শিক্ষানবীশের সিনিয়র হবেন এমন একজন আইনজীবী যিনি কমপক্ষে ১০ (দশ) বছর আইনজীবী হিসাবে পেশাগত কার্য করছেন। তবে একজন সিনিয়র প্রতি বছর ৪ জন বেশি শিক্ষানবীশ গ্রহন করতে পারেন না। ৪) এল.এল.বি ফাইনাল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার পরই শিক্ষানবীশকাল শুরু করা যায়। শিক্ষানবীশকাল শুরুর পর একজন শিক্ষানবীশকে তাহার সিনিয়রের সাথে শিক্ষানবীশ চুক্তি (Contract of Pupillage) সম্পাদন করতে হয় এবং উক্ত চুক্তিপত্রটি বার কাউন্সিল নির্ধারিত একটি রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরন করে সংযুক্তি হিসাবে চুক্তি করার ৩০ দিনের মধ্যে বার কাউন্সিল সচিব বরাবর দাখিল করতে হয়।
★রেজিষ্ট্রেশন এর জন্য আবেদনঃ
রেজিষ্ট্রেশন ফরমের সাথে যা যা প্রদান করতে হয়ঃ একজন শিক্ষানবীশকে আইনজীবী তালিকাভুক্তির জন্য বার কাউন্সিল নির্ধারিত রেজিষ্ট্রেশন ফরম পূরন করে রেজিষ্ট্রেশনের জন্য বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর দাখিল করতে হয়। বর্তমানে পে-অডার, ডি.ডি আথবা বার কাউন্সিল প্রদত্ত পে-স্লিপের মাধ্যমে ৪০০/- সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট শাখায় জমা দিয়ে উক্ত স্লিপের একটি অংশ বার কাউন্সিলে জমা দিয়ে বার কাউন্সিল থেকে সংগ্রহ করা যায়।
★রেজিষ্ট্রেশন ফরমের সাথে নিন্মোক্ত কাগজাদি সংযুক্ত করতে হয়-
ক) সিনিয়রের সাথে সম্পাদিত শিক্ষানবীশ চুক্তি পত্রটির (Contract of Pupillage) সমর্থনে ১ম শ্রেনীর ম্যাজিস্ট্রেট অথবা নোটারি পাবলিকের সামনে একটি হলফনামা (২০০/- টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে) সম্পাদন করতে হয়। [Rule-60,Sub-Rule-3(ii)]
খ) সিনিয়র কর্তৃক সত্যায়িত ৩ (তিন) কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
গ) রেজিস্ট্রেশন ফরম উত্তোলনের জন্য প্রদত্ত ৪০০/- টাকা ফি এর বার কাউনিাসল কপি বা পে-অর্ডার বা ডি.ডি।
ঘ) রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ প্রদত্ত ৮০০/- টাকার পে-অর্ডার, ডি.ডি অথবা বার কাউন্সিলের পে-স্লিপের অংশ।
ঙ) সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও মার্কশীটের ফটোকপি (সিনিয়র কর্তৃক সত্যায়িত)।
★নোট:
রেজিস্ট্রেশন ফরম বার কাউন্সিলে জমা দেয়ার পূর্বে সংযুক্ত কাগজাদি সহ ১টি ফটোকপি করে জমা গ্রহনকারি অফিসার থেকে “রিসিভ করা হয়েছে” মর্মে সাক্ষর করিয়া নিজের সংগ্রহে রাখতে হবে।
বার কাউন্সিল পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য আবেদনপত্র: শিক্ষানবীশ চুক্তির (Contract of Pupillage) মেয়াদ ৬ মাস পূর্ণ হলে একজন শিক্ষানবীশ আইনজীবী তালিকা ভুক্তির পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য আবেদন করতে পারে। উক্ত ফরমটির নাম “Application for Enrolment as Advocate” [Form-A] যা বার কাউন্সিলের আদেশরুল–৫৮ অনুযায়ী সম্পাদন করতে হয়। ফরমটি বর্তমানে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে বার কাউন্সিলের অনুকূলে পে-অর্ডার, ডি.ডি অথবা পে-স্লিপের মাধ্যমে ৩৫০/-টাকা জমা করে সংগ্রহ করা যায়।
★উক্ত ফরমটি পূরন করে নিম্ন বর্নিত কাগজাদি সহ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর জমা দিতে হয়-
ক) রুল-৬০ অনুযায়ি ফরম-তে ৬ মাস শিক্সানবীশকাল সমাপ্ত হইয়াছে এই মর্মে সিনিয়র (Pupil Master) প্রদত্ত সার্টিফিকেট। সার্টিফিকেটটি কার্টিজ পেপারে প্রদত্ত হয়।
খ) কার্টিজ পেপারে ৫টি দেওয়ানী ও ৫টি ফৌজদারী মামলার তালিকা যে মামলাগুলো পরিচালনার সময় সিনিয়রের সাথে শিক্ষানবীশ আইনজীবী উপস্হিত ছিলেন।
গ) ২ জন বিশিষ্ট ব্যাক্তি কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক প্রশংসাপত্র।
ঘ) শিক্ষাগত যোগ্যতার সার্টিফিকেট ও মার্কশীটের সিনিয়র কর্তৃক সত্যায়িত ফটোকপি (S.S.C, Degree এবং L.L.B)।
ঙ) সদ্য তোলা ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজ রঙিন ছবি যা বারের সেক্রেটারি অথবা সিনিয়র দারা সত্যায়িত হতে হবে।
চ) উপরোক্ত কাগজাদি ও তাহাতে বর্নিত তথ্যাদির সত্যতা সম্পর্কে নোটারী পাবলিক অথবা ১ম শ্রেনীর ম্যাজিষ্ট্রেটের সামনে সম্পাদিত হলফনামা (২০০/-টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে)।
ছ) এনরোলমেন্ট ফি বাবদ ১৫০০/-, পরীক্ষা ফি বাবদ ৭০০/- এবং বাতসরিক ফি বাবদ ২০০/- একুনে সর্বমোট ২৪০০/-টাকার ডি.ডি, পে-অডার বা পে-স্লিপের কপি।
জ) রেজিস্ট্রেশন ফরম বাবদ প্রদত্ত ৩৫০/-টাকার ডি.ডি, পে-অর্ডার বা পে-স্লিপের কপি।
★নোট:
একবার রেজিস্ট্রেশন করলে তার মেয়াদ থাকবে ৫ বছর।
★পরীক্ষাসমূহঃ
বার কাউন্সিলে পরীক্ষায় অংশগ্রহনের পর একজন প্রতিদ্বন্ধিকে ৩ টি পরীক্ষায় উর্ত্তিণ হতে হয়। যথা :
১) MCQ পরীক্ষা: MCQ পরীক্ষায় ১০০ টি প্রশ্ন দেয়া হয় যার মধ্যে কমপক্ষে ৫০ পেলে উত্তীর্ণ হওয়া যায়। প্রতিটি সঠিক উত্তরের জন্য ১ নম্বর যোগ হয় এবং প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য .২৫ বিয়োগ হয়। পরীক্ষার সময় ১ ঘন্টা।
২) লিখিত পরীক্ষা: লিখিত পরীক্ষা হয় ১০০ নম্বরে যার মধ্যে উত্তীর্ণ হওয়া যায় ৫০ নম্বরে। সময় ৪ ঘন্টা,
৩) মৌখিক পরীক্ষা: মৌখিক পরীক্ষা ৫০ নম্বরে যার মধ্যে পাশ নম্বর ২৫।
★নোট: কোন প্রতিদ্বন্ধী MCQ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে পারে ১ বার। এবং লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে পরপর তিনবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহন করার সুযোগ আছে।

দেওয়ানী মামলায় পক্ষগণের গর-হাজিরার পরিনাম কি ?

বিধি-১: বিবাদীর হাজিরা ও জবাব দানের জন্য সমনে নির্ধারিত তারিখে পক্ষগণের হাজির হইতে হইবে।- বিবাদীর উপস্থিতির এবং জবাব দানের জন্য সমনে নির্ধারিত দিন পক্ষগণ স্বয়ং কিংবা তাহাদের নিজ নিজ উকিলের মাধ্যমে বিচারালয়ে হাজির দিবেন, এবং অত:পর আদালত কর্তৃক ভবিষ্যতের কোন দিন পর্যন্ত মামলার শুনানী মুলতবী না হইলে সেই দিন মামলার শুনানী সংগঠিত হইবে।
বিধি-৩: কোন পক্ষই হাজির না হইলে মোকদ্দমা খারিজ হইবে।–মোকদ্দমার শুনানীর জন্য ডাক পড়িলে যদি কোন পক্ষই উপস্থিত না হয়, তাহা হইলে আদালত মামলা খারিজের নিমিত্তে আদেশ দান করিতে পারিবে।
বিধি-৬: শুধুমাত্র বাদী হাজির হইলে সেক্ষেত্রে পদ্ধতি:
(১) যেই ক্ষেত্রে মামলার শুনানীর জন্য ডাক পড়িলে বাদী হাজির হয়, এবং বিবাদী হাজির হয় না, সেক্ষেত্রে-
(ক) যখন সমন যথারীতি জারি হইয়া থাকে: যদি প্রমাণীত হয় যে, সমন যথারীতি জারি হইয়াছে, তবে আদালতএকতরফা বিচার করিতে পারিবেন;
(খ) যখন সমন যথারীতি জারি না হইয়া থাকে: যদি প্রমাণীত না হয় যে, সমন যথারীতি জারি হইয়াছে, তা হইলে আদালত বিবাদীর উপর দ্বিতীয়বার সমন প্রেরণ এবং জারি করার নির্দেশ দান করিবেন;
(গ) যেই ক্ষেত্রে সমন যথারীতি জারি হয়, কিন্তু উপযুক্ত সময়ের মধ্যে নহে: যদি প্রমাণীত হয় যে, সমন যথারীতি জারি হইয়াছে, বিবাদীকে সমনে নির্দিষ্ট দিনে হাজির হইয়া জবাব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় প্রদান করা হয়নাই। তবে আদালত পরবর্তী কোন নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত মামলার শুনানী মূলতবী রাখিবে এবং বিবাদীর উক্ত তারিখ জানাইবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবে।
(২) যদি বাদীর ত্রুটির জন্য সমন জারি না হয়, অথবা পর্যাপ্ত সময়ে জারি না হইলে আদালত মামলার শুনানী স্থগিত রাখার দরুন যে খরচ হইবে, তাহা বাদীর বহন করার আদেশ দান করিবে।
বিধি-৭: যেই ক্ষেত্রে মূলতবী শুনানীর দিন বিবাদী হাজির হয় এবং পূর্বে হাজির না হওয়ার উত্তম কারণ দর্শায়, সেই ক্ষেত্রে পদ্ধতি: যেই ক্ষেত্রে আদালত মোকদ্দমার শুনানী একতরফাভাবে মূলতবী করিয়াছে এবং বিবাদী সেই শুনানীর সময় অথবা পূর্বে উপস্থিত হয় এবং তাহার পূর্ব অনুপস্থিতির জন্য উত্তম কারণ দর্শায়, সেই ক্ষেত্রে খরচ বা অন্য বিষয় সম্পর্কে আদালত নির্দেশিত শর্তে বিবাদী তাহার উপস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট দিনে তিনি উপস্থিত হইয়াছিলেন এইরূপ গণ্যে মামলায় জবাব দাখিল করিয়া উহার শ্রবণ করাইতে পারে।
বিধি-৮: কেবল বিবাদী হাজির হইয়া থাকিলে সেই ক্ষেত্রে পদ্ধতি: যেই ক্ষেত্রে মামলার শুনানীর জন্য ডাক পড়িলে যদি বিবাদী হাজির হয়, কিন্তু বাদী হাজির না হয়, সেই ক্ষেত্রে বিবাদী বাদীর দাবি বা উহার অংশ স্বীকার না করিলে আদালত মোকদ্দমা খারিজের আদেশ প্রদান করিবেন, কিন্তু বিবাদী যদি বাদীর দাবি অথবা উহার অংশ স্বীকার না করে, তবে আদালত সেই অনুপাতে বিবাদীর বিরুদ্ধে ডিক্রি দান করিবেন, এবং বাদীর অবশিষ্ট দাবি সম্পর্কে মামলা খারিজ করিবেন।
বিধি-১৩: বিবাদীর বিরুদ্ধে একতরফাভাবে ডিক্রি রদকরণ: কোন মামলায় বিবাদীর বিরুদ্ধে একতরফা ডিক্রি প্রদান করা হইয়া থাকিলে, উহা রদ করার জন্য বিবাদী ডিক্রিদানকারী আদালতে আবেদন করিতে পারিবে এবং যদি এই ক্ষেত্রে বিবাদী সন্তোষজনকরূপে প্রমাণ করিতে পারে যে, যথারীতি সমন জারি করা হয় নাই, অথবা যখন মামলাটি শুনানীর জন্য ডাক পড়িয়াছে, তখন সে কোন উপযুক্ত কারণে হাজির হওয়া হইতে বাধাপ্রাপ্ত হইয়াছিল, তাহা হইলে আদালত মামলার খরচ আদালতে শোধ কিংবা অপর কোন শর্তে, যাহা উপযুক্ত মনে করা হয়, ডিক্রিটি রদ করিয়া আদেশ দিবে এবং মামলার র্কাযপদ্ধতি পরিচালনার নিমিত্তে একটি তারিখ নির্দিষ্ট করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, ডিক্রি যদি এইরূপ ধরনের হয়ে যে, উহা শুধুমাত্র আবেদনকারী বিবাদীর উপর হইতে রদ করা যাইবেনা, সেক্ষেত্রে অন্যান্য সকল অথবা যেই কোন বিবাদীর বিরুদ্ধেও রদ করা যাইবে।

দেওয়ানী মামলায় পক্ষগণের গর-হাজিরার পরিনাম কি ?

বিধি-১: বিবাদীর হাজিরা ও জবাব দানের জন্য সমনে নির্ধারিত তারিখে পক্ষগণের হাজির হইতে হইবে।- বিবাদীর উপস্থিতির এবং জবাব দানের জন্য সমনে নির্ধারিত দিন পক্ষগণ স্বয়ং কিংবা তাহাদের নিজ নিজ উকিলের মাধ্যমে বিচারালয়ে হাজির দিবেন, এবং অত:পর আদালত কর্তৃক ভবিষ্যতের কোন দিন পর্যন্ত মামলার শুনানী মুলতবী না হইলে সেই দিন মামলার শুনানী সংগঠিত হইবে।
বিধি-৩: কোন পক্ষই হাজির না হইলে মোকদ্দমা খারিজ হইবে।–মোকদ্দমার শুনানীর জন্য ডাক পড়িলে যদি কোন পক্ষই উপস্থিত না হয়, তাহা হইলে আদালত মামলা খারিজের নিমিত্তে আদেশ দান করিতে পারিবে।
বিধি-৬: শুধুমাত্র বাদী হাজির হইলে সেক্ষেত্রে পদ্ধতি:
(১) যেই ক্ষেত্রে মামলার শুনানীর জন্য ডাক পড়িলে বাদী হাজির হয়, এবং বিবাদী হাজির হয় না, সেক্ষেত্রে-
(ক) যখন সমন যথারীতি জারি হইয়া থাকে: যদি প্রমাণীত হয় যে, সমন যথারীতি জারি হইয়াছে, তবে আদালতএকতরফা বিচার করিতে পারিবেন;
(খ) যখন সমন যথারীতি জারি না হইয়া থাকে: যদি প্রমাণীত না হয় যে, সমন যথারীতি জারি হইয়াছে, তা হইলে আদালত বিবাদীর উপর দ্বিতীয়বার সমন প্রেরণ এবং জারি করার নির্দেশ দান করিবেন;
(গ) যেই ক্ষেত্রে সমন যথারীতি জারি হয়, কিন্তু উপযুক্ত সময়ের মধ্যে নহে: যদি প্রমাণীত হয় যে, সমন যথারীতি জারি হইয়াছে, বিবাদীকে সমনে নির্দিষ্ট দিনে হাজির হইয়া জবাব দেওয়ার জন্য যথেষ্ট সময় প্রদান করা হয়নাই। তবে আদালত পরবর্তী কোন নির্ধারিত তারিখ পর্যন্ত মামলার শুনানী মূলতবী রাখিবে এবং বিবাদীর উক্ত তারিখ জানাইবার জন্য নির্দেশ প্রদান করিবে।
(২) যদি বাদীর ত্রুটির জন্য সমন জারি না হয়, অথবা পর্যাপ্ত সময়ে জারি না হইলে আদালত মামলার শুনানী স্থগিত রাখার দরুন যে খরচ হইবে, তাহা বাদীর বহন করার আদেশ দান করিবে।
বিধি-৭: যেই ক্ষেত্রে মূলতবী শুনানীর দিন বিবাদী হাজির হয় এবং পূর্বে হাজির না হওয়ার উত্তম কারণ দর্শায়, সেই ক্ষেত্রে পদ্ধতি: যেই ক্ষেত্রে আদালত মোকদ্দমার শুনানী একতরফাভাবে মূলতবী করিয়াছে এবং বিবাদী সেই শুনানীর সময় অথবা পূর্বে উপস্থিত হয় এবং তাহার পূর্ব অনুপস্থিতির জন্য উত্তম কারণ দর্শায়, সেই ক্ষেত্রে খরচ বা অন্য বিষয় সম্পর্কে আদালত নির্দেশিত শর্তে বিবাদী তাহার উপস্থিতির জন্য নির্দিষ্ট দিনে তিনি উপস্থিত হইয়াছিলেন এইরূপ গণ্যে মামলায় জবাব দাখিল করিয়া উহার শ্রবণ করাইতে পারে।
বিধি-৮: কেবল বিবাদী হাজির হইয়া থাকিলে সেই ক্ষেত্রে পদ্ধতি: যেই ক্ষেত্রে মামলার শুনানীর জন্য ডাক পড়িলে যদি বিবাদী হাজির হয়, কিন্তু বাদী হাজির না হয়, সেই ক্ষেত্রে বিবাদী বাদীর দাবি বা উহার অংশ স্বীকার না করিলে আদালত মোকদ্দমা খারিজের আদেশ প্রদান করিবেন, কিন্তু বিবাদী যদি বাদীর দাবি অথবা উহার অংশ স্বীকার না করে, তবে আদালত সেই অনুপাতে বিবাদীর বিরুদ্ধে ডিক্রি দান করিবেন, এবং বাদীর অবশিষ্ট দাবি সম্পর্কে মামলা খারিজ করিবেন।
বিধি-১৩: বিবাদীর বিরুদ্ধে একতরফাভাবে ডিক্রি রদকরণ: কোন মামলায় বিবাদীর বিরুদ্ধে একতরফা ডিক্রি প্রদান করা হইয়া থাকিলে, উহা রদ করার জন্য বিবাদী ডিক্রিদানকারী আদালতে আবেদন করিতে পারিবে এবং যদি এই ক্ষেত্রে বিবাদী সন্তোষজনকরূপে প্রমাণ করিতে পারে যে, যথারীতি সমন জারি করা হয় নাই, অথবা যখন মামলাটি শুনানীর জন্য ডাক পড়িয়াছে, তখন সে কোন উপযুক্ত কারণে হাজির হওয়া হইতে বাধাপ্রাপ্ত হইয়াছিল, তাহা হইলে আদালত মামলার খরচ আদালতে শোধ কিংবা অপর কোন শর্তে, যাহা উপযুক্ত মনে করা হয়, ডিক্রিটি রদ করিয়া আদেশ দিবে এবং মামলার র্কাযপদ্ধতি পরিচালনার নিমিত্তে একটি তারিখ নির্দিষ্ট করিবেন:
তবে শর্ত থাকে যে, ডিক্রি যদি এইরূপ ধরনের হয়ে যে, উহা শুধুমাত্র আবেদনকারী বিবাদীর উপর হইতে রদ করা যাইবেনা, সেক্ষেত্রে অন্যান্য সকল অথবা যেই কোন বিবাদীর বিরুদ্ধেও রদ করা যাইবে।

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে কোন কোন ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হন !

মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে কোন কোন ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হন !

(১) যদি কোন অংশীদার মৃত ব্যক্তির সাথে অন্যের মাধ্যমে সম্পর্কিত হয় তবে ঐ ব্যক্তির জীবদ্দশায় সংশ্লিষ্ট উত্তরাধিকারীগণ মৃত ব্যক্তির সম্পত্তির অংশ পাবেনা। উত্তরাধীকার আইনের সাধারণ নিয়মে বাদ যাবে।

(২) রক্তের নিকটতম সম্পর্কের ক্ষেত্রে-“রক্তের নিকটতম আত্মীয় দূরবর্তী আত্মীয়কে বহির্ভূত করে। এই নিয়মে কোন ব্যক্তি তার পিতা এবং পিতামহ রেখে মারা গেলে পিতামহ পিতার দ্বারা বহির্ভূত হন অর্থাৎ উত্তরাধিকার সূত্রে সম্পত্তির কোন অংশ পাননা।
(৩) যার সম্পত্তি বিভাজিত হবে তিনি যদি এমন কোন ব্যক্তির দ্বারা খুন হন যিনি তার সম্পত্তির উত্তরাধিকারী সেক্ষেত্রে খুনি ব্যক্তি তার সম্পত্তির উত্তরাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।
(৪) ইসলাম র্ধম পরিত্যাগ করলে মুসলিম উত্তরাধিকার আইন অনুসারে একজন ব্যক্তি উত্তরাধিকার বঞ্চিত হতে পারেন।
(৫) স্বামী কর্তৃক পরিত্যক্ত স্ত্রী অর্থাৎ তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তিতে উত্তারধিকারী হন না।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৭* ফুটপাত দিয়ে মোটর সাইকেল চালালে ৩ মাস কারাদণ্ড এবং ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা।
* সংরক্ষিত নারী আসনে বসতে না দিয়ে কেউ ওই আসনে বসলে তাকে ১ মাসের কারাদণ্ড বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।
* গাড়ির ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণি পাস হতে হবে।
* সাধারণ চালকের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর এবং পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর।
* লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালালে ছয় মাসের কারাদণ্ড অথবা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।
* হেলপার বা শ্রমিক গাড়ি চালাতে পারবেন না।
* প্রতিযোগিতা করে গাড়ি চালালে, সেক্ষেত্রে দুর্ঘটনা না হলেও চালকের ২ বছরের জেল বা ২ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। গতিসীমা লঙ্ঘন করলেও একই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।
* দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ও নিহতের ঘটনা ঘটলে দণ্ডবিধির আওতায় বিচার হবে।
* সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। এই আইনে আমলযোগ্য অপরাধে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় দায়ীকে আটক করতে পারবে।
* হেলপারেরও লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
* চালকের সহকারীর লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানা।
* নেশা জাতীয় দ্রব্য বা মদ পান করে কেউ গাড়ি চালালে ৩ মাসের কারাদণ্ড এবং ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা। ফুটপাত দিয়ে মোটরসাইকেল চালালে ৩ মাস কারাদণ্ড এবং ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা।
* গাড়ী চালানোর সময় মোবাইল ফোন বা এরূপ কোনো ডিভাইজ ব্যবহার করলে ১ মাসের জেল বা ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন চালক।
* ছয় মাসের কারাদণ্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে- এমন অপরাধের ক্ষেত্রে পুলিশ বিনা পরোয়ানায় চালকদের গ্রেপ্তার করতে পারবে।
* রাস্তায় মোট ১২ পয়েন্ট বরাদ্দ থাকবে। বিভিন্ন অপরাধের জন্য চালকের পয়েন্ট কাটা যাবে। পয়েন্ট শূন্য হয়ে গেলে তার ড্রাইভিং লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে।

সংবিধান নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য

√ সংবিধান ছাপাতে ব্যয় হয়েছিলো – ১৪ হাজার টাকা ;
√ সংবিধান অলংকরণের দায়িত্বে ছিলেন – শিল্পী হাশেম খান ;
√ সংবিধান গণপরিষদে বিল আকারে উত্থাপিত হয়- ১২ই অক্টোবর , ১৯৭২সাল;
√ সংবিধান গণপরিষদে বিল আকারে উত্থাপন করেছিলেন – ড. কামাল হোসেন ;
√ সংবিধান গণপরিষদে পাশ এবং আইনে পরিণত হয় – ৪ঠা নভেম্বর , ১৯৭২ সাল;
√ সংবিধান জাতীয় সংসদে প্রণীত হয় – ৪ঠা নভেম্বর,১৯৭২ সাল;
√ সংবিধান জাতীয় সংসদে কার্যকর হয় -১৬ই ডিসেম্বর,১৯৭২ সাল;
√ মূল সংবিধানের কপিটি বর্তমানে সংরক্ষিত আছে – বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে ;
√ সংবিধানের প্রথমেই রয়েছে – প্রস্তাবনা
√ সংবিধানের প্রথম ভাগে বলা হয়েছে -রয়েছে – প্রজাতন্ত্র সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের প্রথম ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – সাতটি ;
√ সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে বলা হয়েছে -রয়েছে – রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের দ্বিতীয় ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – আটারো টি ;
√ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে বলা হয়েছে – মৌলিক অধিকার সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের তৃতীয় ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – একুশ টি ;
√ সংবিধানের চতুর্থ ভাগে বলা হয়েছে – নির্বাহী বিভাগ সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের চতুর্থ ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – ষোল টি;
√ সংবিধানের পঞ্চম ভাগে বলা হয়েছে -আইনসভা সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের পঞ্চম ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – ঊনত্রিশটি ;
√ সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগে বলা হয়েছে – বিচার বিভাগ সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – চব্বিশটি;
√ সংবিধানের সপ্তম ভাগে বলা হয়েছে – নির্বাচন সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের সপ্তম ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – নয়টি ;
√ সংবিধানের অষ্টম ভাগে বলা হয়েছে – মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের অষ্টম ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – ছয়টি ;
√ সংবিধানের নবম ভাগে বলা হয়েছে -বাংলাদেশের কর্মবিভাগ সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের নবম ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – দশটি ;
√ সংবিধানের দশম ভাগে বলা হয়েছে – সংবিধান সংশোধন সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের দশম ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – একটি ;
√ ১২ সংবিধানের একাদশ ভাগে বলা হয়েছে – বিবিধ সম্পর্কে ;
√ সংবিধানের একাদশ ভাগে অনুচ্ছেদ রয়েছে – এগার টি ;

নোটারি পাবলিক ও তার কাজ

নোটারি পাবলিক ও তার কাজ

 নোটারিস অর্ডিন্যান্স এবং নোটারিস রুলস, ১৯৬৪ দ্বারা বাংলাদেশে নোটারি পেশা নিয়ন্ত্রিত হয়। সাধারণত কোনো ব্যক্তি যিনি কমপক্ষে সাত বছর আইনজীবী হিসেবে কর্মরত আছেন অথবা বিচার বিভাগের সদস্য হিসেবে কমপক্ষে পাঁচ বছর কর্মরত ছিলেন অথবা সরকারের লেজিসলেটিভ ড্রাফটিং বা সরকারের আইন প্রণয়ন কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি নোটারি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্য।

একজন নোটারি নিম্নলিখিত সব অথবা যে কোনো কাজ করতে পারে:
(১) কোনো দলিলের সত্যতা প্রমাণ করা, সত্যায়িত অথবা প্রত্যয়ন করা। (২) পেমেন্ট অথবা ডিমান্ডের ক্ষেত্রে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য কোনো প্রত্যর্থপত্র (প্রমিজরি নোট), হুন্ডি অথবা বিল অব এক্সচেঞ্জ উপস্থাপন করা। (৩) কোনো প্রমিজরি নোট, হুন্ডি অথবা বিল অব এক্সচেঞ্জ গ্রহণে অস্বীকৃতি বা নন-পেমেন্টের মাধ্যমে সৃষ্ট ডিজঅনারের চিহ্ন দেয়া বা ঘোষণা করা অথবা নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট, ১৮৮১-এর অধীনে অধিকতর নিরাপত্তার জন্য ঘোষণা নোটিশ জারি করা। (৪) শপথ পরিচালনা করা অথবা কোনো ব্যক্তি থেকে শপথপত্র গ্রহণ করা। (৫) বটমরি এবং রেসপনডেনশিয়া বন্ড, চার্টার পার্টি এবং অন্যান্য বাণিজ্যিক দলিলাদি প্রস্তুত করা। (৬) বাংলাদেশের বাইরে কোনো দেশ অথবা জায়গায় কার্যকর কোনো দলিল সেখানকার আইনের সঙ্গে মিল রেখে একই আকারে এবং ভাষায় প্রস্তুত করা, সত্যতা প্রমাণ করা। (৭) কোনো দলিল এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করা এবং অনুবাদের সত্যতা প্রমাণ করা। (৮) নির্ধারিত অন্য যে কোনো কাজ করা।
নিয়োগ প্রক্রিয়া : আগ্রহী প্রার্থীকে নির্ধারিত ফরমে (আবেদন) প্রয়োজনীয় ব্যক্তিগত তথ্যাদি প্রদান করে একটি আবেদন করতে হয় এবং ওই প্রয়োজনীয় তথ্যাদি ম্যাজিস্ট্রেট, ব্যাংকার, ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় এলাকার নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিসহ কমপক্ষে ১০ জন ব্যক্তি কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হতে হয়। গৃহীত প্রত্যেকটি আবেদন উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে এবং বিষয়টির ওপর তদন্ত করবে।
নিযুক্তির জন্য সুপারিশের ক্ষেত্রে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ নিম্নলিখিত বিষয়গুলো বিবেচনা করবে।যথা: (ক) আবেদনকারী ওই এলাকায় বসবাস করে কিনা; (খ) ওই এলাকার কোনো বাণিজ্যিক গুরুত্ব আছে কিনা; (গ) আবেদনকারীর বাণিজ্যিক আইন সম্পর্কে উপযুক্ত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা আছে কিনা; (ঘ) একাধিক নোটারি সমন্বয়ে আবেদনকারীর কোনো আইনজীবী ফার্ম আছে কিনা; (ঙ) আবেদনকারী ওই এলাকার অন্যান্য আবেদনকারী অপেক্ষা অধিক উপযুক্ত কিনা।
উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নোটারি হিসেবে নিয়োগের বিষয়ে সচিব বরাবর সুপারিশমালা প্রেরণ করার পর নোটারি সার্টিফিকেট ফি ট্রেজারিতে জমা প্রদান সাপেক্ষে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বিধি মোতাবেক নোটারি পাবলিক নিয়োগ করে থাকে এবং প্রতি তিন বছর অন্তর অন্তর নবায়ন ফি জমা প্রদান সাপেক্ষে নোটারি সার্টিফিকেট নবায়ন করা হয়। আইনের অধীনে সরকার কর্তৃক পরিচালিত নোটারি রেজিস্ট্রারে তার নাম লিপিবদ্ধ করা হয়। প্রত্যেক নোটারি প্রতিবছর জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে বিগত বছরে তার দ্বারা কৃত কাজের একটি রিটার্ন দাখিল করেন।

প্রিসিডেন্ট বা নজির কি?

প্রিসিডেন্ট বা নজির কি?আসুন আইনি ভাষায় না গিয়ে আমরা আগে সহজে বোঝার চেষ্টা করি, “তার নজিরবীহিন কলায় সবাই মুগ্ধ” এর মানে কি দাড়ায়? সে এমন একটা কাজ করেছে যা আগে দেখা যায়নি । ঠিক তেমনি বিচার কাজ করতে গিয়ে বিচারক গন অনেক নতুন নতুন সমস্যায় পড়েন এবং নজিরবীহিন রায়ের মাধ্যমে তার সমাধান করেন। এই নজিরবীহিন রায়গুলো তখন নজির হয়ে থাকে। যেহেতু এগুলো বিভিন্ন কোর্টের রায়ের মাধ্যমে আসে তাই এই নজির (precedent) কে আরও কিছু আইনে নামেও ডাকা হয় যেমন: Case law, Rulings etc  

এই নজির কিন্তু আবার অধ:নস্ত কোর্টের উপর ফরজ (বাধ্যতামূলক) যাই হোক সেই প্রসঙ্গে একটু পড়ে আসছি এবার একটু ইতিহাসের দিকে আসা যাক বাংলাদেশে এই নজিরের আগমন ব্রিটিশদের হাত ধরে, কমন ল এর মাধ্যমে, এমনকি সালমন্ড মনে করেন কমন ল,য়ের প্রায় পুরোটাই এসেছে নজিরের মাধ্যমে। ইংল্যান্ডের বিচারকরা ছিলেন তাদের বিচারীক বিষয়ে বিজ্ঞ এবং খুবই সম্মানীয় ব্যক্তি, তাই তাদের দর্শন ও বিচারকে সর্বোচ্চ মর্যাদা দেয়া হত, আবার তারাই ক্ষেত্র বিশেষে আইন প্রণেতাও ছিলেন ।
নজিরের মূল উপাদান ধরা হয় Stare decisis Stare মতবাদকে। এটি একটি ল্যাটিন শব্দ যার অর্থ decisis non quet movere অর্থাৎ ‘সিদ্ধান্তে অটল থাকা এবং গৃহীত সিদ্ধান্তে ব্যতিক্রম না ঘটানো’। মানে হচ্ছে, আদালতের কোন রায় আদেশ বা সিদ্ধান্তে যা আসে পরবর্তীতে ঠিক একই রকম মামলায় আগের মতই আদেশ আসবে। এবং আমাদের সংবিধানেও তাই বলা আছে।
সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুসারে আপিল বিভাগের সিদ্ধান্ত হাইকোর্ট সহ অধঃ:ন্যস্ত আদালতের উপর বাধ্যতামূলক। তবে মনে রাখতে হবে এই যে, কোন রায়ের সম্পূর্ণ অংশই কিন্তু নজির নয়। রায়ের যেই অংশে সিদ্ধান্তের কারণ / নিয়ম দেয়া থাকে সেটুকুই বাধ্যতামূলক (যদি বিষয় ও ঘটনা এক ঘটে তবেই)। আবার সব রায়েই নজির সৃষ্টিকারী উপাদান থকে না।

আবার আসা যাক কে কার কথা শুনতে বাধ্য (আদালত) বা বাধ্য নয়। ঊর্ধ্ব ক্রমে সাজানে হোল।

আপিল বিভাগ

  • বাংলাদেশের সকল নিম্ন আদালত এবং ট্রাইব্যুনাল আপিল বিভাগের রায় মেনে চলতে বাধ্য।
  • আপিল বিভাগ নিজে নিজের রায় মেনে চলতে বাধ্য নয়।
  • আপিল বিভাগ নিজ রায় বা আদেশ পুনর্বিবেচনা করতে পারেন (অ: ১০৫)
হাইকোর্ট বিভাগ
  • হাইকোর্ট বিভাগ আপিল বিভাগের রায় মেনে চলতে বাধ্য।
  • হাইকোর্ট বিভাগের রায় সকল নিম্ন আদালত মেনে চলতে বাধ্য।
  • হাইকোর্ট বিভাগের রায় সকল নিম্ন আদালত মেনে চলতে বাধ্য তবে কিছু ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে বাধ্য নয়।
জেলা জজ দায়রা আদালত বা সেশন জজ
  • হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগের রায় মেনে চলতে বাধ্য।
  • জেলা জজ ও দায়রা আদালত কোন নজির সৃষ্টি করেন না।
অন্যান্য আদালত
  • হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগের রায় মেনে চলতে বাধ্য।

সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হওয়ার যোগ্যতা

সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট হওয়ার যোগ্যতা

 প্রাথমিক শর্তাবলী
1. বার কাউনসিল পরীক্ষার মাধ্যমে যে কোন বার এসোসিয়েশনে অ্যাডভোকেট (সাধারণ অ্যাডভোকেটের তালিকাভুক্তিকরণ) হিসাবে তালিকাভুক্তহতে হবে।
2. নিম্নোক্ত যে কোন একটি যোগ্যতা থাকতে হবে :-

  1. বাংলাদেশের কোন নিম্ন আদালতে কমপক্ষে ২ বছর প্র্যাকটিস করতে হবে; অথবা,
    B. আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রীএবং অ্যাডভোকেট হিসাবে বিদেশের কোন আদালতে সরকারের অফিসিয়াল গেজেটে নির্দেশিত পন্থায় প্র্যাকটিস করেছেন; অথবা,
    C. যুক্তরাজ্যের বারে ব্যারিস্টার হিসাবে Call পেয়েছেন অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকেLL.M এ 2nd class (50%mark) পেয়েছেন এবং সুপ্রীম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবীর চেম্বারে কমপক্ষে ২ বছর কাছ করেছেন; অথবা,
    D. বিচার বিভাগীয় অফিসার হিসাবে অন্ততঃ দশ বছর কাজ করেছেন। এরূপ অফিসারকে লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রণেরআবশ্যকতা নেই।
দ্বিতীয় পর্যায়ের শর্তাবলীঃ
  1. কোন অ্যাডভোকেট যিনি উপরিউক্ত শর্তাবলী পূরন করেছেন তাকে নির্দেশিত পন্থায় হাইকোর্ট বিভাগে আইন চর্চা করার অনুমতি চেয়ে আবেদন জানাতে হবে। আবেদন পত্র বার কাউনসিলে জমা দিতে হবে এবং উক্ত আবেদনপত্রে নিম্নোক্ত সংযুক্তিথাকবেঃ
    A. সংশ্লিষ্ট বার এসোসিয়েশন হতে একটি সনদ এই মর্মে যে, উক্ত অ্যাডভোকেট তার বার এসোসিয়েশনের নিয়মিতসদস্য এবং আইন চর্চাকরেছেন ২ বছর , অথবা , যুক্তারাজ্যের বারেতাকে ব্যারিস্টার হিসাবে Call করেছে এই মর্মে একটি সনদ, অথবা কোন স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে LL.M এ উচ্চতর দ্বিতীয় বিভাগ অর্জন করেছে; এবং
    B. কোর্টের একজন সিনিয়র অ্যাডভোকেটের চেম্বারে কমপক্ষে দুই বছর কাজ করেছেন; এবং
    C. দেওয়ানী বা ফৌজদারী বা উভয় মামলা যা নিয়ে উক্ত অ্যাডভোকেট সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থিত হয়েছে এরূপ ২৫টি মামলার তালিকা; এবং
    D. হাইকোর্টের অনুমোদন ফি ৫,০০০ টাকা প্রদানের রশিদ কিংবা ব্যাংক ড্রাফট; এবং
    E. উক্ত অ্যাডভোকেটের ১ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
    2. প্রত্যেক আবেদনকারীকে Bangladesh Legal Paractitioners and Bar Council Rules, 1972 (65(2)) অনুযায়ী লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণপূর্বক পাশ করতে হবে।

দলিলে ব্যবহৃত বিভিন্ন রকম শব্দের অর্থ জেনে রাখুন

দলিলে ব্যবহূত এ রকম কিছু শব্দের অর্থ ও ব্যুৎপত্তি নিচে তুলে ধরা হলো—
সাং = সাকিন, সাকিম। সাকিন বা সাকিম শব্দের অর্থ ঠিকানা, বাসস্থান।
গং = অন্যরা, সমূহ। অমুক [ব্যক্তিনাম] ও অন্যান্য বা তার সহযোগীগণ। যেমন: যদি লেখা থাকে আবদুল কাদের গং তাহলে বুঝতে হবে যে আবদুল কাদেরের সঙ্গে আরও অনেকে আছেন।
মোং = মোকাম। এর অর্থ আবাস বাসস্থান হলেও মূলত বাণিজ্য স্থান বা বিক্রয়কেন্দ্র বোঝাতেই এটি ব্যবহূত হয়।
কিঃ = কিস্তি। কিন্তু শব্দটি দফা, বার, ক্ষেপ এই অর্থেও ব্যবহূত হয়। এজমালি/ইজমালি = যৌথ, সংযুক্ত, বহুজনের একত্রে। যেমন: এজমালি সম্পত্তি বলতে যৌথ মালিকাধীন সম্পত্তিকে বোঝায়।
কিত্তা/ কিতা = আববি ‘ক্বত্বহ’ শব্দজাত। এর অর্থ অংশ, জমির ভাগ, পদ্ধতি ছানি = আরবি শব্দ, অর্থ দ্বিতীয়বার। পুনর্বিবেচনার প্রার্থনা। যেমন: ছানি মামলা।
সোলেনামা = মীমাংসা, আপোষ/ আপস।ছোলেনামা মানে আপস- মীমাংসাপত্র।
জঃ = জমা। সাধারণ অর্থে ‘জমা’ বলতে সঞ্চিত,রাশীকৃত, স্তূপীকৃত হওয়া বোঝায়। কিন্তু ভূমি আইন ও দলিল-দস্তাবেজে এটি ভিন্ন অর্থ বহন করে। যেমন: জমা মানে পুঁজি, মোট, খাজনা, রাজস্ব, বার্ষিক কর [হাওলার বার্ষিক জমা ১০ টাকা]। আবার ‘জমা ওয়াশিল’-এর অর্থ আয়-ব্যয়ের হিসাব; ‘জমা ওয়াশিল বাকি’ মানে দেয় খাজনার কত আদায় বা লভ্য খাজনার কত আদায় হয়েছে এবং কত বাকি আছে তার হিসাব; ‘জমা খারিজ’ অর্থ যৌথ খতিয়ানের জমা থেকে কোনো সহমালিক বা অংশীদারের আবেদনক্রমে তার অংশ আলাদা করে যে নতুন জমা ও খতিয়ান সৃষ্টি করা হয়।
খারিজ = সাধারণ অর্থে বাতিল করা হয়েছে এমন বোঝায়। ভূমি আইনে একজনের নাম থেকে অন্যজনের নামে জমির মালিকানা পরিবর্তন করে নেওয়াকে বোঝায়।
তমঃ = তমসুক। আরবি শব্দজাত, যার অর্থ দলিল, ঋণ-স্বীকারপত্র বা খত। অর্থাৎ কর্জ গ্রহীতা যে লিখিত পত্র, বিশেষত সরকারি স্ট্যাম্প বা কাগজমূলে কর্জদাতার কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। বন্ধকী তমসুক মানে হলো বন্ধকনামা বা বন্ধকী বা বন্ধকী খত।
দং = দরুন, বাবদ, দখল।
নিম = ফারসি শব্দ। এর অর্থ অল্প, অর্ধেক, অধস্তন বা অধীন ইত্যাদি।
নং = নম্বর বা সংখ্যা অর্থে বোঝানো হয়।
পঃ = পঞ্চম বা পাঁচের স্থানীয়।
পোঃ = পোস্ট অফিস বা ডাকঘর বোঝানো হয়।
মহঃ = মহকুমা। ব্রিটিশ আমলে জেলার একটি প্রশাসনিক অংশকেই মহকুমা বলা হতো।
মুসাবিদা = খসড়া তৈরি করা।
মুসাবিদাকারক= মানে যিনি দলিল লেখেন।
হিঃ = হিসাব শব্দের সংক্ষিপ্ত রূপ|
চৌঃ = চৌহদ্দি। চৌহদ্দি শব্দের অর্থ হচ্ছে চারধারের সীমানা।
তঃ/তপঃ = তফসিল, তহশিল।
তামাদি = ফারসি শব্দ। এর অর্থ নির্ধারিত সময়সীমা।
বিতং = বিস্তারিত বিবরণ, কৈফিয়ত, বৃত্তান্ত অর্থে ব্যবহূত হয়।
মাং/ মাঃ = মারফত। মারফত মানে মাধ্যম, অর্থাৎ যার হাত দিয়ে বা মাধ্যমে আদান-প্রদান করা হয়।
সহঃ = সহকারী, যিনি কাজে সহযোগিতা করেন।
সুদিখত = একশ্রেণীর বন্ধকী দলিল।
হলফ = সত্য বলার জন্য যে শপথ করা হয়। হলফকারী মানে যিনি সত্যায়ন করেন।

বিদেশ থেকে স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া

এই জন্য অন্তত ১ দিনের জন্য হলেও  husband k বাংলাদেশে আসতে হবে বাংলাদেশে এসে  কাজী অথবা একজন আইনজীবীর কাছে যেতে হবে, সেখানে গিয়ে  তার স্ত্...